ভাগবতের অনুষ্ঠান বাতিল, তুঙ্গে বিতর্ক

মিশন ট্রাস্টের দাবি, গত ৩১ অগস্ট সদনের তরফে এক কর্তা তাদের জানান, ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করা হবে। কারণ, ওটা পুজোর ছুটির সময়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৩১
Share:

মোহন ভাগবত।

নিবেদিতার সার্ধ শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের সভার জন্য অক্টোবরের ৩ তারিখ মহাজাতি সদন ব্যবহার করতে চেয়ে গত ৬ জুন আবেদন করেছিল ভগিনী নিবেদিতা মিশন ট্রাস্ট। সদন কর্তৃপক্ষ ভাড়া দিয়েও দিয়েছিলেন। আচমকা গত ১ সেপ্টেম্বর তাঁরা ট্রাস্টকে জানালেন, পূর্ত দফতর হলের শব্দব্যবস্থা পরীক্ষা করবে। এবং তার জন্য ৩ অক্টোবর দিনটাই বাছা হয়েছে।

Advertisement

মিশন ট্রাস্টের দাবি, গত ৩১ অগস্ট সদনের তরফে এক কর্তা তাদের জানান, ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করা হবে। কারণ, ওটা পুজোর ছুটির সময়। ট্রাস্টের তরফে ওই কর্তাকে বলা হয়, পুজোর ছুটির সময় অনুষ্ঠান করার জন্য অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এর পর ওই কর্তা বলেন, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি আনতে হবে। ট্রাস্টকে যুগ্ম কমিশনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেন সোমবার। কিন্তু তার আগেই গত শুক্রবার হলের তরফে জানানো হয়, অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। কারণ, ওই সময়ে মেরামতির কাজ চলবে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘মহাজাতি সদনে মোহন ভাগবতের ওই অনুষ্ঠানে পুলিশের আপত্তি ছিল না। হল কর্তৃপক্ষই মেরামতির কাজের জন্য অনুমতি বাতিল করেছেন।’’

মহাজাতি সদনের ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরে অনেক আজেবাজে লোক মহাজাতি সদন ভাড়া নিয়ে পরিকাঠামো নষ্ট করছিল। এ বার থেকে ভাড়ার জন্য যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের সম্পর্কে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কাছ থেকে রিপোর্ট নেওয়া হবে। রিপোর্ট ভাল হলে তবেই হল ভাড়া পাবেন।’’ ভাগবতের অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনুষ্ঠানের সময়ে তিন দিন ওই হলে সাউন্ড চেক করা হবে।’’ যা থেকে প্রশ্ন উঠছে, হলের শব্দব্যবস্থা খারাপ তো হয়ে যায়নি! তা হলে শুধু পরীক্ষার জন্য ভাগবতের অনুষ্ঠানের সময়টাকেই বাছতে হল কেন?

Advertisement

কাছাকাছি অভিজ্ঞতা হয়েছে বিজেপি-রও। দলের সভাপতি অমিত শাহ কলকাতায় থাকবেন ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর। তাঁর কর্মসূচির জন্য ওই সময়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ভাড়া নিতে চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন, পুজোর আগে হল ফাঁকা নেই। পরপর বিভিন্ন সংস্থার বুকিং আছে। দু’টি ঘটনার মধ্যেই তৃণমূল সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণ দেখছে গেরুয়া শিবির।

এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার বেআইনি ভাবে কোনও বৈধ অনুষ্ঠানকে আটকাতে পারে না।’’ সঙ্ঘ নেতা মনমোহন বৈদ্য বলেন, ‘‘আরএসএসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতেই মমতা সরকার এই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন