Midday Meal Scheme

মিড ডে মিল বণ্টন নিয়ে ফের বিতর্ক

বিজেপি টিচার্স সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনতা কার্ফুর কারণে রবিবার তাঁরা স্কুলে যাবেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৪:৫৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

স্কুল পড়ুয়াদের সোমবার থেকে মিড ডে মিলে দু’কেজি চাল এবং দু’ কেজি আলু দেওয়ার নির্দেশ শুক্রবার দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। শনিবার আর এক নির্দেশে বলা হয়, এ দিনই বিতরণের কাজ শুরু করতে হবে।

Advertisement

নয়া নির্দেশ নিয়ে বলাই বাহুল্য ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে ক্ষোভ ছড়ায় কলকাতার মাধ্যমিক স্কুলের জেলা স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ নিয়ে। ওই নির্দেশে এ দিন বলা হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত রাখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে, মিড ডে মিলের চাল এবং আলু এ দিন রাত ১০টার মধ্যে অভিভাবকদের মধ্যে বিলি শুরু করা হোক। পুরোপুরি বিলির কাজ শেষ করতে হবে আজ, রবিবার। দু’দিনই বিতরণের রিপোর্ট বিকেল তিনটের মধ্যে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে পাঠাতে হবে। স্কুল শিক্ষা দফতরের খবর, সেই নির্দেশ এ দিন বিকেলের দিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। রাজ্য জুড়ে আজই চাল এবং আলু বিতরণের কাজ শুরু হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত বিতরণের কাজ চলবে।

অনেক প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ বহু স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক অথবা একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না। স্কুল সম্পূর্ণ ছুটি ছিল। ফোন পেয়ে প্রধান শিক্ষকদের পড়িমড়ি করে ছুটে আসতে হয়। অভিভাবকদের বিষয়টি জানানোতেও খুব অসুবিধা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

Advertisement

সোমবার মিড ডে মিল বিলির জন্য প্রয়োজনে শনি এবং রবিবার স্কুল খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি টিচার্স সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনতা কার্ফুর কারণে রবিবার তাঁরা স্কুলে যাবেন না। কয়েক জন শিক্ষকের বক্তব্য ছিল, সোমবার থেকে স্কুলে চাল ও আলু বিতরণ শুরু করলে স্কুলে জমায়েত হওয়া শুরু হবে। তা হলে স্কুল ছুটি দিয়ে কী লাভ হল?

যাদবপুর কাটজুনগর স্বর্ণময়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার জানালেন, তিনি বিষয়টি এ দিন জেনেছেন দুপুর আড়াইটে নাগাদ। তাঁর স্কুল এ দিন বন্ধ ছিল। স্কুলে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়া হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে। তাঁদের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগই করা যায়নি। তাই এ দিন চালু, আলু বিতরণ শুরু করা যায়নি। রবিবার জনতা কার্ফুর সময় কী করে বিতরণ করা যাবে সে নিয়েও তিনি উদ্বিগ্ন। পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক শ্রীদামচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘মিড ডে মিল নিয়ে সরকারি নির্দেশ বাস্তবসম্মত নয়।’’ এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইনের বক্তব্য, ‘‘ছুটির মধ্যে মিড ডে মিল পড়ুয়ারা পেলে তা অবশ্যই ভাল বিষয়। কিন্তু বন্টনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা জরুরি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়া হস্টেলে থাকে। তারা দূরে বাড়ি চলে গিয়েছে। এত অল্প সময়ে তাদের অভিভাবকদের স্কুলে নিয়ে আসা সমস্যার।’’ রাজ্যের সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু এ দিন বলেন, ‘‘মিড ডে বিতরণে এত তাড়াহুড়ো না করলেও হত।’’

মিড ডে মিল বিতরণের সরকারি নির্দেশে রাজনীতির ছোঁয়া দেখছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জনতা কার্ফু কর্মসূচি ব্যর্থ করার জন্যই রবিবার মিড ডে মিল বিতরণের উদ্দেশ্যে স্কুল খোলা রাখার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। আর একটা উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। হয়তো ধরে নেওয়া হয়েছে, বড় জমায়েত এড়ানোর যে পরামর্শ ক্রমাগত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দিয়ে চলেছে, তা মানার জন্য এবং মোদীজির ডাকা জনতা কার্ফু পালন করতে রবিবার মিড ডে মিল নিতে কেউ স্কুলে যাবে না। তখন খাবার লুঠ করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন