আসছেন মমতা, কোন্দল ঠেকাতে তৎপরতা

আর তিন দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচবিহারে আসার কথা। তাতেও যেন থামছে না তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:২৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

আর তিন দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচবিহারে আসার কথা। তাতেও যেন থামছে না তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে। এই অবস্থা চলতে থাকলে মুখ্যমন্ত্রী যে তা ভালভাবে নেবেন না তা বুঝতে পেরেই এ বার লড়াই থামাতে দলীয় কর্মী ও নেতাদের কাছে আবেদন করছেন তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব।
দলীয় সূত্রের খবর, দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দফায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে সতর্ক করে দিচ্ছেন। যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতেই বৈঠক করে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করছেন। মুখে অবশ্য কেউই গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার করছেন না। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “গোষ্ঠীকোন্দলের ব্যাপার নেই। কিছু দুষ্কৃতী কিছু এলাকায় গণ্ডগোল করছেন। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। যারা গণ্ডগোল করছে তাদের অনেকেকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে।” পার্থবাবু বলেন, “যুব কর্মীরা কোথাও গণ্ডগোলে জড়িত নেই। রাতের অন্ধকারে মুখে কাপড় বেধে বেশ কিছু জায়গায় গন্ডগোল করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি।”
নেতারা স্বীকার না করলেও যুব-তৃণমূলের কার্যত থামছেই না কোচবিহারে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। রাজ্য নেতারা দফায় দফায় হুঁশিয়ারি দিলেও কোনও কাজ হয়নি। সম্প্রতি কোচবিহারে দল পর্য়বেক্ষকের দায়িত্বে আনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পরেও গন্ডগোল থামেনি। গত দু’দিনে দিনহাটার নাজিরহাট, বাসন্তীরহাটে দফায় দফায় গণ্ডগোল হয়। ওই এলাকায় পার্টি অফিস ভাঙচুর ও রাতে গুলি-বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। এক যুব তৃণমূল কর্মীর বাড়িও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বুধবার রাতে দেওচড়াইয়ে এক যুব তৃণমূল কর্মীকে লোহার রড দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোচবিহার শহর সংলগ্ন নাটাবাড়ি ও কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের একাধিক এলাকায় নিত্য বোমাবাজির অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের একজন বলেন, “নেত্রীর কাছে সব খবর রয়েছে। তিনি এবারে কোচবিহারে সফরে এলে কিছু বার্তা দেবেন তা সবাই বুঝতে পারছেন। এর আগে চ্যাংরাবান্ধায় প্রশাসনিক বৈঠকে দিনহাটার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।”
বিরোধীরা অবশ্য দাবি করেছেন, ক্ষমতা না গেলে তৃণমূলের এই কোন্দল থামাবে না। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “সরকারের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে তৃণমূলের লড়াই কোনওভাবেই থামবে না। জনগণই তাঁদের থামিয়ে দেবে।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর আর কিছু করার নেই। যা করার জনগণ করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন