বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি করেছেন প্রায় দু’দশক। এমএস করেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়িয়েছেন লা ভেগাস, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অধুনা এই রাজ্যে বেসরকারি কলেজের শিক্ষক। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ট্রেন্ড নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন অশোক সেনগুপ্ত।
কোর না আইটি— চাকরি পাওয়ার জন্য কোনটা ভাল, কেন?
একটি তথ্যে দেখছি, ১৯৭২ সালে গোটা দেশে ৭২টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫৬৭২। প্রতি বছর গোটা দেশে প্রায় ৬ লক্ষ পড়ুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক হচ্ছে। কিন্তু চাকরির সুযোগ তো সেই মতো হচ্ছে না। তাই কোর-ই হোক বা আইটি— বিষয়টায় আগাগোড়া দখল থাকতে হবে। তবুও কোর আর আইটি-র তুলনা করলে চাকরি পাওয়ার নিরিখে আইটি-কেই আমি প্রাধান্য দেব। কারণ, তথ্য বলছে, গড়ে ৩০ শতাংশ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর স্নাতক চাকরি পাচ্ছেন। এর ১৮.৩৪ শতাংশ আইটি বা সফটওয়্যারে, ৩.৯৫ শতাংশ সরাসরি প্রোজেক্টে (এটাও মূলত আইটি-নির্ভর) আর ৭.৪৯ শতাংশ কোর।
আইটি-র মধ্যেও তো হরেক স্পেশালাইজেশন। এর মধ্যে কোনটা ভাল, কেন ভাল?
আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ইসিই, মানে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বাজার খুব একটা ভাল নয়। ইনস্ট্রুমেন্টেশনটা আইটি এবং কোর-এর মিশ্রণ। এতে কিছু কাজের সুযোগ থাকে। টিসিএস, ইনফোসিসের মতো সংস্থাগুলিতে ‘কম্পিউটার সায়েন্স’ পাশ করা ছেলেমেয়েদের চাহিদা অপেক্ষাকৃত বেশি। এই সবের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল মূল আইটি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বাজার। তবে, কম্পিউটার বা আইটি-তে নানা রকম কাজ থাকে। বিজ্ঞানের স্নাতকরাও বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি পেতে পারেন। কোর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে আইটি-তে যাওয়া যায় অনায়াসে।
কাউন্সেলিং-এর সময় প্রতিষ্ঠান না স্পেশালাইজেশন— কোনটার উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত?
এখন প্রতি বছর যে হারে পড়ুয়া পাশ করে বেরোচ্ছে তাতে বেসরকারি অনামী প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েদের চাকরির বাজার খুব ভাল বলা যাবে না। ক্যাম্পাসিং কতটা আশার আলো দেখাবে কে জানে? ভাগ্য ভাল হলে বা মুরুব্বির জোর থাকলে আলাদা। তাই নামী প্রতিষ্ঠানে যদি কেউ অপেক্ষাকৃত কম চাহিদার স্পেশালাইজেশন পান, আমার মতে সেটাই ভাল।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চাকরির বাজার পাঁচ বছর আগে যতটা ছিল, এখন তার কতটা বদল হয়েছে? বছর পাঁচ বাদে চিত্র কত বদলাতে পারে?
যদি গোটা দেশের কথা ধরেন, বলব পাঁচ বছর আগের চেয়ে এখন অবস্থা ভাল। বছর পাঁচ বাদে আরও ভাল হবে। কিন্তু যদি এ রাজ্যের কথা বলেন, পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। কারণ, চাকরির বাজারের জন্য যে তিনটি জিনিস দরকার, সেগুলি হল এক: শিল্প, দুই: শিল্প, তিন: শিল্প।