সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর স্টেশনে আসা ট্রেনের যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁদের নাম-ঠিকানাও লেখা হয়। নিজস্ব চিত্র
উদ্বেগ আরও বাড়ল।
ভিন্ রাজ্য থেকে মেদিনীপুরে ফিরলেন ২৬৯ জন। সকলেই রবিবার ট্রেনে করে মেদিনীপুরে ফিরেছেন বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। ওই সূত্র জানাচ্ছে, রবিবার রাতে সকলে মেদিনীপুরেই ছিলেন। সোমবার সকালে যে যাঁর বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি কোথায়? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘এক- একজনের বাড়ি জেলার এক- এক এলাকায়।’’ জানা যাচ্ছে, সকলেই দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে ছিলেন। কেউ কাজের সূত্রে। কেউ পড়াশোনার সূত্রে। সোমবারও অনেকে ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন বলে খবর এসেছে প্রশাসনের কাছে। যে সব ট্রেন লকডাউনের আগে সফর শুরু করেছিল তারা নির্দিষ্ট গন্তব্য পৌঁছবে বলে নির্দেশ ছিল রেলের। সেই মতো সোমবারও একটি ট্রেন মেদিনীপুর স্টেশনে আসে। স্টেশনেই ওই যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
রবিবার দুপুরে একটি ট্রেনে করে মেদিনীপুরে আসেন ২১ জন। এরমধ্যে ১১ জন পুরুষ, ১০ জন মহিলা। পরে রাতে অন্য একটি ট্রেনে করে মেদিনীপুরে এসেছেন ২৪৮ জন। এরমধ্যে ২০১ জন পুরুষ, ৪৭ জন মহিলা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুর স্টেশনে সকল যাত্রীর থার্মাল স্ক্রিনিং হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ট্রেনে করে ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা মেদিনীপুরে ফিরেছেন, তাঁদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, সকলকেই আপাতত দু’সপ্তাহ ‘হোম আইসোলেশনে’ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিদেশ ও ভিন্ রাজ্য ফেরতেরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করায় সোমবারও শহরের একাধিক এলাকায় উত্তেজনাও ছড়ায়। পুলিশও যায়। জেলার স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, সোমবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে বিদেশ ফেরত ১৪৩ জনের উপরে নজরদারি চলেছে। এরমধ্যে ২৪ জন ২৮ দিন গৃহ নজরবন্দি (হোম আইসোলেশন) থেকেছেন। তাঁরা এখন বিপন্মুক্ত। এখনও ১৩ জনের খোঁজ মেলেনি। বাকি ১১৯ জন এখনও আইসোলেশনে রয়েছেন। এরমধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন ৭ জন। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১১২ জন। এঁদের সকলের শারীরিক পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেছে স্বাস্থ্য দফতরের দল। জেলার সর্বত্র নজরদারি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, কেউ জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ফিরলে দ্রুত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদেশ ফেরত, ভিন্ রাজ্য ফেরতেরা ঘরে থাকার নির্দেশ ঠিকঠাক মানছেন কি না তাও দেখা হচ্ছে।