প্রধানমন্ত্রী প্রদীপ জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। পুড়ল আতসবাজিও। রবিবার ভবানীপুরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
ফাটল বাজি, উড়ল ফানুস।
কেউ মোবাইলের টর্চ জ্বেলে উঠে গেলেন আবাসনের ছাদে, কেউ প্রদীপ জ্বালালেন বারান্দায়। পরিবেশ বিধি জলাঞ্জলি দিয়ে কোথাও সার দিয়ে জ্বালানো হল টায়ার। রাস্তায় মিছিল করে দেওয়া হল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিও। তবে আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর আহ্বানে সাড়াও দেননি রাজ্যের অনেকে।
দু’সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে ‘জনতা-কার্ফু’র বিকেলে শারীরিক দূরত্ব-বিধির তোয়াক্কা না-করে ঢাকঢোল নিয়ে ‘হুজুগে’ মেতে রাস্তায় নেমেছিলেন অনেকে। আর রবিবার রাত পৌনে ন’টা থেকেই কলকাতার নানা জায়গা থেকে শব্দবাজি ফাটার অভিযোগ আসতে শুরু করে। সঙ্গে পরিবেশ বিধি উড়িয়ে ফানুস ওড়ানো। জনতা-কার্ফুর দিনের মতোই এর সঙ্গে যুক্ত হয় কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে রাস্তায় ঘোরা। অনেককেই মাঝরাস্তায় বাজি ফাটাতে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি বহুতলের ছাদের রং বদলে যায় ধোঁয়া আর আলোয়।
করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রার্থনায় জে এন রায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: সুমন বল্লভ।
দূরত্ব বজায় রেখে ছোঁয়াচ বাঁচানোর চেষ্টার বদলে দল বেঁধে ছাদে উঠে শব্দবাজি ফাটানো দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, এই কি মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই? ওই সময়ে লকডাউন ভাঙার অভিযোগে কলকাতা পুলিশ ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর। আর নিয়ম ভেঙে বাজি ফাটানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯৮ জনকে। ঘড়ি ধরে রাত ৯টায় যে কর্মসূচি শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের অনেক জায়গায় সেই সময়ের আগেই শুরু হয়ে যায় দীপ জ্বালানো। নির্ধারিত সময় পেরিয়েও তা চলতে থাকে অনেক ক্ষণ। ঝাড়গ্রামে জরুরি পরিষেবার যে দোকানগুলি খোলা ছিল, তার কয়েকটিও আলো নিভিয়ে দেয়। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে মিছিল হয় খড়্গপুরে। একই ধ্বনি শোনা গিয়েছে কলকাতার কাছে বালি-বেলুড়ে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে বাজি পুড়েছে। বিভিন্ন গ্রামে ট্রান্সফর্মারের ‘সুইচ’ নামিয়ে দিয়ে গ্রাম জুড়ে অন্ধকার নামিয়ে আনার খবর মিলেছে। একই অভিযোগ এসেছে নদিয়া থেকেও। রামপুরহাটেও বহু পথবাতির সংযোগ কেটে আঁধার নামানোর অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, এর ফলে অনেক বাড়িতে কেবল টিভির সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: উৎসব কীসের! প্রশ্ন বিরোধীদের, দিলীপ দেখছেন বাজি-জবাব
বোলপুরের নানা জায়গায় মুহুর্মুহু শব্দবাজি ফেটেছে। অনেক জায়গায় রাস্তায় সার দিয়ে টায়ারও জ্বালানো হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে বাজির আওয়াজে কান পাতা ছিল দায়। হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান হোক বা পুরুলিয়া-বাঁকুড়া— ছবি কমবেশি একই রকম— অকাল দীপাবলির!
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)