গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কোনও ভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। শুক্রবারও রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হলেন সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭১ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ১৮৮। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। তাঁদের মধ্যে কলকাতায় ১৩ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৯ এবং হাওড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৫ হাজার ৯৩১।
দুর্গাপুজোর আর কয়েকটা দিন বাকি। তার আগেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন এ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগে রাজ্য প্রশাসন। পুজোতে কী হবে তা ভেবেই আঁতকে উঠছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা আগেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন, যদি করোনা বিধি ঠিক মতো মানা না হয়, তা হলে রাজ্যে ‘করোনার সুনামি’ দেখা দেবে। যদিও রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বার বার বৈঠকে বসা হয়েছে। বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু তার পরেও একটা উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন প্রতি দিন বাড়ছে, তেমনই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হারও বেড়ে চলেছে। প্রতি দিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। বৃহস্পতিবার এই সংক্রমণের হার ছিল ৮.৭২। শুক্রবার তা একেবারেই হেরফের হয়নি। এ দিনও সংক্রমণের হার ৮.৭২।
উৎসবের আগে সংক্রমণের হারে চিন্তা বাড়ানোর পাশাপাশি দৈনিক সুস্থতার হারও বিশেষ স্বস্তি দিচ্ছে না। বৃহস্পতিবারের থেকে তা অতি সামান্য কমেছে। এ দিন সুস্থতার হার ৮৭.৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত কাল যা ছিল ৮৭.৭৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ১৯৪ জন। ফলে রাজ্যে মোট সুস্থের সংখ্যা ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৫৭। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বুলেটিন অনুযায়ী, এ দিন ৪৩ হাজার ২২৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
দৈনিক সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। এ দিন ৭৮১ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় এই সংখ্যাটা ৭৫৮। এর পরেই রয়েছে হাওড়া (২৩০), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৪৭), হুগলি (১৫০) এবং পূর্ব মেদিনীপুর (১৩৮)। অন্য দিকে, পশ্চিম বর্ধমানে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৮ জন, পূর্ব বর্ধমানে ৮৮, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৯২ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরে ৭০, দার্জিলিঙে ১০৮, কোচবিহারে ৯৭, জলপাইগুড়িতে ৯৬, উত্তর দিনাজপুরে ২৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)