Coronavirus in West Bengal

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর

এক দিনে দু’জন আক্রান্ত। এক জন পানিহাটির বাসিন্দা, অন্য জন ব্যারাকপুরের। দু’জনেই বৃদ্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি

ফের করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। এ বার এক দিনে দু’জন। এক জন পানিহাটির বাসিন্দা, অন্য জন ব্যারাকপুরের। দু’জনেই বৃদ্ধ। এই খবর চাউর হতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। পানিহাটিতে শনিবার প্রথম সংক্রমণের খবর মিললেও ব্যারাকপুরে এ নিয়ে চার জন সংক্রমিত হলেন। গত কয়েক দিন ধরে রোজই ব্যারাকপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংক্রমণের খবর আসছে।

Advertisement

আক্রান্তদের বারাসতের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে তাঁদের পরিবারের সদস্য-সহ বেশ কয়েক জনকে। এলাকা ‘সিল’ করে দিয়েছে পুরসভা। পাড়ার বাসিন্দাদের বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। আপাতত ওই পরিবারগুলিকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগাবে সংশ্লিষ্ট পুরসভাই। পানিহাটির আক্রান্ত ব্যক্তি গত কয়েক দিন এলাকায় দোকান-বাজার করেছেন। ফলে সেখানকার বাসিন্দারা এখন প্রবল আতঙ্কিত। ব্যারাকপুরের আক্রান্ত কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পরেই তিনি আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছে ব্যারাকপুর পুরসভা।

পানিহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, ঘোলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওই বাসিন্দা প্রাক্তন পুলিশকর্মী। বয়স ৬৫। গত কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখিয়েও সুস্থ হননি। গত বৃহস্পতিবার পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে নিজেই পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে তা ব্যারাকপুরের করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বাড়ি ফিরে শুক্রবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারাকপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনার উপসর্গ সল্টলেকের আরও এক বাসিন্দার

শনিবার তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তার পরেই তাঁকে বারাসতের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ব্যক্তির শ্যালিকা ছিলেন তাঁর বাড়িতে। আক্রান্তের স্ত্রী-শ্যালিকা এবং এক নিকটাত্মীয়ের পরিবারকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বাড়ির চার দিকের ৫০ মিটার এলাকা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি কী ভাবে সংক্রমিত হলেন, তা নিয়ে ধন্দে স্বাস্থ্য দফতরও।

ব্যারাকপুরের শিবতলা এলাকার আক্রান্তের বয়স ৮০। অসুস্থ হওয়ায় বেশ কিছু দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দিন চারেক আগে তিনি বাড়ি ফেরার জন্য ব্যারাকপুরের পুর প্রধান উত্তম দাসকে ফোন করেন। গত বৃহস্পতিবার সেখানে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। শনিবার সকালে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তাঁকে বারাসতের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যদের পাঠানো হয়েছে বারাসতের কাছেই একটি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে।

পুর প্রধান জানান, ওই এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি গোটা এলাকা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। ৭০-৮০টি পরিবারকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। তাদের কাছে আনাজ পৌঁছে দেবে পুরসভা। ওই এলাকার দোকান-বাজারও বন্ধ থাকবে আগামী ১৪ দিন। গত রবিবার বৃদ্ধের বাড়ির কাছাকাছি এলাকার এক ব্যক্তির করোনা-রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল।

শনিবার আক্রান্ত বৃদ্ধ যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, গত রবিবার আক্রান্ত ব্যক্তি ওই বেসরকারি হাসপাতালেরই কর্মী। ওই হাসপাতাল থেকেই বৃদ্ধ সংক্রমিত হয়েছেন বলে সন্দেহ পরিবারের। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ব্যারাকপুরের মণিরামপুরে দুই আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। তাতে শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুর প্রধান জানিয়েছেন, তিনি এলাকায় র‌্যাপিড পরীক্ষার জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি লিখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন