Coronavirus in West Bengal

দূরত্ববিধি শিকেয়, মদের জন্য রাত থেকে লাইন

ভিড় এবং ধাক্কাধাক্কি থামাতে কলকাতার কালীঘাট, চাঁদনি চক, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে পুলিশ লাঠি নিয়ে তেড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৩:৩৬
Share:

রাজপুর এলাকার একটি মদের দোকানের সামনে ক্রেতাদের লাইন। সোমবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কেউ রবিবার রাত থেকেই দোকানের সামনে। কেউ ইট পেতে লাইন রেখেছেন। জলপাইগুড়িতে তো অনেকে বৃষ্টিতে ভিজেও লাইন ছাড়েননি। সোমবার বেলা ৩টের সময় যখন মদের দোকান খুলল, রাজ্যের বহু জায়গায় লাইন ছড়িয়ে গিয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার, দূরত্ববিধি শিকেয় তুলেই। লাইনে পাঁচ জনের বেশি দাঁড়ানো যাবে না, এ কথা মানে কে? তবে মাস্ক ছাড়া মদ দেওয়া হবে না, এই শর্ত থাকায় লাইনে মাস্ক পরেছিলেন প্রায় সকলেই।

Advertisement

ভিড় এবং ধাক্কাধাক্কি থামাতে কলকাতার কালীঘাট, চাঁদনি চক, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে পুলিশ লাঠি নিয়ে তেড়ে যায়। গোলমাল পাকানোর অভিযোগে পুলিশ নন্দকুমারে দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, বসিরহাটেও সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়।

মদের দোকান যে সোমবার খুলবে, তার আভাস আগেই ছিল। রাজ্যের আবগারি কমিশনার উমাশঙ্কর সোমবারেই একটি নির্দেশিকায় বেলা ১২টা থেকে বেশ কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে মদ বিক্রির অনুমতি দেন। তার পরে অধিকাংশ জায়গাতেই মদ বিক্রি শুরু হয়েছে বেলা ৩টে থেকে। নির্দেশ অনুযায়ী, এক বার এক জন শুধু দু’টো বোতলই কিনতে পারবেন। কলকাতায় দেখা যায়, অনেকে এক বার বোতল কিনে কাছের ফলের দোকান থেকে কালো পলিপ্যাক কিনে নিচ্ছেন, তার পর তাতে বোতল মুড়ে কারও হাত দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে আবার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। দোকান বন্ধ হয় সন্ধে ৭টার মধ্যে।

Advertisement

অসহায়: খাবারের অপেক্ষায় লাইন। সোমবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

মদের দোকান খোলার বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বাজারে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, লকডাউনে কাজ হারিয়ে এমনিতেই অনেক পরিবার সমস্যায় রয়েছে। এর মধ্যে মদের দোকান খুললে বহু পরিবারে অশান্তি চরমে উঠবে, মত্তদের উপদ্রবও বাড়বে। আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক যতন মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: কোন জেলায় করোনা আক্রান্ত কত, মৃত কত, তালিকা দিল রাজ্য সরকার

অভিযোগ উঠেছে, মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ, কান্দি, বেলডাঙা, হাওড়ার ধুলাগড় এবং নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কোথাও কোথাও দোকানের কাছে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুর্শিদাবাদের আবগারি দফতরের এক আধিকারিক জানান, কোনও অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। একই কথা বলেন জেলার পুলিশকর্তারাও। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও বলেন, ‘‘দূরত্ব মেনে চলতেই হবে। অন্য নিয়মগুলোও মানতে হবে। দোকান মালিকদেরও সে-কথা বলা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ট্রুন্যাট পদ্ধতি কী? কতটা কাজে আসবে করোনা ঠেকাতে? জেনে নিন এক ঝলকে

প্রসঙ্গত, মদের দাম আগেই ৩০ শতাংশ বেড়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাতেও স্পষ্ট বলা হয়েছে, দোকানের সামনে বর্ধিত দামের (এমআরপি) তালিকা ঝোলাতে হবে। তবে বাঁকুড়ায় জেলার অল লাইসেন্সি এক্সাইজ় অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দ্রনাথ আচার্য বলেন, “লকডাউনের মধ্যেই মদের দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে আমাদের কাছে মজুত মদের বোতলে পুরনো দামই লেখা। এ নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন