Coronavirus in West Bengal

মাসের পর মাস বন্ধ, স্কুলের বারান্দায় মদের বোতল, কাঠের স্তূপ, চত্বরে ঘুরছে গরু

গত বছরের মার্চ মাস থেকেই বন্ধ স্কুল। আর তার ফাঁকেই স্কুলের বারান্দায় জমা হচ্ছে জ্বালানি কাঠ বা ঘুঁটে, কোথাও রাখা হচ্ছে গবাদি পশু।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৬:০২
Share:

করণদিঘির সেই স্কুল। নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের স্কুলটি কোথায়?—

Advertisement

একজন হাত তুলে দেখিয়ে বললেন, ‘‘সামনে ডান দিকে।’’

যে বারান্দা কচিকাঁচাদের কলরবে ভরে থাকত, শোনা যেত ‘অ এ অজগর আসছে তেড়ে’, দেখা গেল সেখানেই নিশ্চিন্তে জাবর কাটছে কয়েকটি গরু। ঘুরে বেড়াচ্ছে ছাগল, মুরগি। কাছাকাছি থাকা এক বাসিন্দাকে জিজ্ঞেস করায় তাঁর উত্তর, ‘‘স্কুল তো বন্ধই থাকে, কোনও কাজও হয় না। তাই কিছু জিনিস এনে রেখেছি।’’

Advertisement

শনিবার করণদিঘির নীলকুঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমনই ছবি দেখা মিলল। স্থানীয়রা বলছেন, শুধু করণদিঘিই নয়, জেলার চোপড়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, ইটাহার এবং রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতেই গ্রামীণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ছবিটা এমন। বহু প্রাথমিক বিদ্যালয়ই ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার অভিযোগ, স্কুল
চত্বরে মদের বোতল, গ্লাস পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে। করোনা আবহে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন। মাঝে কিছু দিন পরিস্থিতি অনুকূল হলেও ফের জারি হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ।

সব মিলিয়ে গত বছরের মার্চ মাস থেকেই বন্ধ স্কুল। আর তার ফাঁকেই স্কুলের বারান্দায় জমা হচ্ছে জ্বালানি কাঠ বা ঘুঁটে, কোথাও রাখা হচ্ছে গবাদি পশু। এলাকার সচেতন বাসিন্দারা বলেন, ‘‘এর থেকেই রাজ্যের শিশুশিক্ষার হাল পরিষ্কার।’’

উদ্বেগ প্রকাশ করে করণদিঘির এক স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘‘প্রাচীর থাকলে বা ক্লাস চালু থাকলে এই দৃশ্য দেখতে হত না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা দরকার।’’

জেলা তৃণমূল নেতা জাভেদ আখতার বলেন, ‘‘যথেষ্ট চিন্তার বিষয়।’’ তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন, ‘‘স্কুলের বারান্দায় জ্বালানি থাকবে বা গরু ঘুরবে, এ দৃশ্য আমাদের লজ্জা। প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপ করার আবেদন করা হবে।’’

ইসলামপুরের মহকুমাশাসক সপ্তর্ষি নাগ বলেন, ‘‘জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন