Coronavirus Lockdown

মার্কিন মুলুকের চাকরি খুইয়ে আনাজ বিক্রি

চাকরি পাওয়ার পর সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে চাকরি হারিয়ে এখন মাথায় হাত পড়েছে কার্তিকের।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২০ ০৩:৪৩
Share:

রুজির পথ। নিজস্ব চিত্র

আমেরিকার একটি নামী জাহাজ সংস্থায় চাকরি করতেন। লকডাউনের আগে বাড়ি এসেছিলেন। মে মাস থেকে আমেরিকাতেই নতুন একটি সংস্থায় চাকরিতে যোগ দেওয়া কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেই চাকরি গিয়েছে। চাকরি খুইয়ে এখন আনাজ বিক্রি করছেন কার্তিক মাইতি। পরিস্থিতি করে স্বাভাবিক হবে, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে কার্তিক ও তাঁর পরিবার।

Advertisement

পাঁশকুড়ার খণ্ডখোলা এলাকার বাহারপোতা গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক ২০১৩ সালে বৃত্তিমূলক শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন হোটেল ম্যানেজমেন্টে। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ ও বিবাহিতা দিদির আর্থিক সাহায্যে পাঠক্রম শেষ করে গত বছর এপ্রিল মাসে আমেরিকার আলাবামা মোবিল বন্দরে একটি নামী জাহাজ সংস্থায় ১০ মাসের চুক্তিতে শেফের চাকরি নেন কার্তিক। ভারতীয় মুদ্রায় মাসিক ৪০ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি। তাঁকে বিদেশে পাঠাতে গিয়ে ভাই কমলের কলেজের পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই নিজে চাকরি পাওয়ার পর ফের ভাইকে কলেজে ভর্তি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন কার্তিক। চাকরির চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ২৫ জানুয়ারি পাঁশকুড়ায় বাড়িতে ফেরেন কার্তিক। মে মাস থেকে আমেরিকারতেই অন্য একটি সংস্থায় চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু করোনার জন্য মার্চ মাস থেকে শুরু হয় লকডাউন। এই মুহূর্তে বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু আমেরিকায়। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার ওই সংস্থা কার্তিককে জানিয়েছে,আপাতত আমেরিকায় আসা যাবে না। চাকরিতে যোগদানের বিষয়টি ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।

বাবা, মা ও ভাইকে নিয়ে তিনজনের সংসার। চাকরি পাওয়ার পর সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে চাকরি হারিয়ে এখন মাথায় হাত পড়েছে কার্তিকের। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাই সংসার চালাতে আর কোনও উপায় না পেয়ে বেছে নিয়েছেন আনাজ বিক্রির পথ। পাঁশকুড়ার মাগুরি জগন্নাথচক থেকে প্রতিদিন সকালে সাইকেলে করে আনাজ কিনে এনে বাহারপোতায় বিক্রি করেন কার্তিক।

Advertisement

আরও পড়ুন: সেলিনার ড্রাইভিং-ই ভরসা দিল রোগীদের

মা ভানুমতি মাইতির কথায়, ‘‘কষ্ট করে ছেলেটাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম। করোনা সব শেষ করে দিল। ছেলেটা বেকার হয়ে গেল। কখনও ভাবিনি ওকে আনাজ ব্যবসা করতে হবে।’’ যদিও বিরূপ পরিস্থিতিতে হার মানতে নারাজ কার্তিক। জানালেন, ‘‘অনেক টাকা মাইনে পেতাম। রাতারাতি আবার গরিব হয়ে গেলাম। তবে আমার বিশ্বাস, আবার সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। জীবনের এই লড়াইটাই করে যেতে চাই।’’

আরও পড়ুন: ঘরে শিশু, ভয়ে ছুঁতে পারেন না করোনা-যোদ্ধা মা

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন