Coronavirus Lockdown

লকডাউন-আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষ

খাবার না আসায় তিন জেলায় কয়েক হাজার বিঘা ভেড়িতে মাছ চাষ প্রায় হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৭
Share:

ছবি সংগৃহীত।

লকডাউন ও আমপানের জোড়া ফলায় রাজ্যে বিপন্ন চিংড়ি চাষ।

Advertisement

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, দুই চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র লাগোয়া ভেড়িতে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি চাষ হয়। এর মধ্যে বাগদা প্রজাতির চিংড়ি চাষ মূলত বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু করোনার কারণে দেশ জুড়ে লকডাউনের জন্য ভিন‌্ রাজ্য থেকে চিংড়ির চারা, খাবার না আসায় তিন জেলায় কয়েক হাজার বিঘা ভেড়িতে মাছ চাষ প্রায় হয়নি। যেটুকু হয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে সব শেষ করে দিয়েছে।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মৈপীঠে প্রায় ৩০০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভেড়িতে চিংড়ি চাষ করেন ওয়াজেদ গাজি। তিনি বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর, বছরে দু’বার আমরা চিংড়ি চাষ করি। চিংড়ির চারা ও খাবার সবই চেন্নাই থেকে আনি। ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা আনলেও মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ায় চারা ও খাবার আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। যেটুকু মাছ উৎপাদন হয়েছিল আমপানের কবলে অর্ধেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ একই অবস্থা নামখানার মাছ চাষি অনুপ নায়কের। তাঁর খেদ, ‘‘লকডাউনের জন্য ষাট বিঘা জমির মধ্যে মাত্র দশ বিঘা জমিতে চিংড়ির চাষ করতে পেরেছি। তার উপর প্রায় একশো জন শ্রমিক রয়েছেন। সব মিলিয়ে আমার এই মরসুমে প্রায় দশ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়ে গেল।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, রাজ্যের এই তিন জেলা থেকে চাষযোগ্য প্রায় আশি শতাংশ চিংড়ি ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, থাইল্যান্ড রপ্তানি হয়। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার মৈপীঠের বৃহৎ চিংড়ি মাছ চাষি তথা একটি রফতানি সংস্থার অধিকর্তা কমল নায়ক বলেন, ‘‘লকডাউনে আমাদের মাছ রফতানির ব্যবসা শেষ হয়ে গেল। ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে সমুদ্র লাগোয়া এই তিন জেলায় প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি চাষ হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে মাত্র ৩০ শতাংশ চাষ হয়েছিল। সম্প্রতি আমপানের প্রকোপে বাঁধের জল ঢুকে অর্ধেক মাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

চিংড়ি মাছ রফতানিকারী সংস্থার এক কর্তা শুভ্রবিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লকডাউনের জন্য চিংড়ি বিদেশে রফতানি না হওয়ায় মাছ চাষি থেকে শুরু করে রফতানিকারক সংস্থার ব্যবসা পুরোপুরি মার খেল।’’ কাকদ্বীপের কেন্দ্রীয় নোনাজল মৎস্য গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানী গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ওই তিন জেলার চাষিদের কেবল চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল না থেকে মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে হবে। চিংড়ির ভেড়িতে পারসে, তোপসে, মিল্ক ফিস, তেলাপিয়া চাষ করলে চাষিরা আবার আর্থিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন