‘নিয়ম ভেঙে’ চাকরিতে ঢুকেই গেলেন পরেশের মেয়ে!

গত লোকসভা উপনির্বাচনে বামেদের পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:৩৪
Share:

পরেশ অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।

পরেশ অধিকারীর মেয়ের স্কুলে চাকরিতে যোগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কোচবিহারে প্রচারে ঝড় তুলতে চায় বাম-বিজেপি।

Advertisement

শনিবারই স্কুলে যোগ দেন পরেশবাবুর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। বিরোধীদের অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তালিকায় নাম ছিল না। কিন্তু তাঁর বাবা পরেশচন্দ্র অধিকারী ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দিতেই তালিকায় এক নম্বরে পৌঁছে যান অঙ্কিতা অধিকারী। তার পরেই তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

গত লোকসভা উপনির্বাচনে বামেদের পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। সেই থেকে কোচবিহারকে পাখির চোখ করে এগোতে শুরু করে কেন্দ্রের শাসক দল। রাজ্য নেতারা তো বটেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরাও কোচবিহার সফর শুরু করে। কোচবিহারে এসে রথযাত্রার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। মেখলিগঞ্জ কোচবিহার জেলার অংশ হলেও জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থায় পরেশবাবুর মেয়ের চাকরির মতো বিষয়টি পেয়ে তেড়েফুঁড়ে নামতে চাইছে দল।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাতারাতি বদলে গেল স্কুল সার্ভিসের ওয়েট লিস্ট, শীর্ষে সদ্য তৃণমূলে আসা নেতার মেয়ে!

বাম আমলে পরেশবাবু খাদ্য সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলার সম্পাদকের দায়িত্বও সামলেছেন বহুদিন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পদ পেয়েছেন। বিজেপি মনে করছে, এই বিষয়ে শাসক দলকেও যেমন কোণঠাসা করা সম্ভব, তেমনই বামেদের ভাবমূর্তি যে মোটেই ভাল নয় সেটাও তুলে ধরা সহজ। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই তৃণমূলের একাধিক দুর্নীতির বিষয় সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “যে নামই ছিল না তালিকায়, সেই নাম সামনে যোগ্যদের পেছনে ফেলে চাকরি হয়ে গেল শাসক দলের নেতার মেয়ের। এর পরেও মানুষের কি কিছু বুঝতে বাকি আছে? এই ঘটনার বিচার সাধারণ মানুষের উপরেই ছাড়ব আমরা।”

বামেরা অবশ্য বিজেপির ওই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, বাম ক্ষমতায় থাকার সময় যে কেউই দুর্নীতির সুযোগ পায়নি তা সবাই জানে। দল পরিবর্তনের পরেই পরেশবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়কে সামনে রেখে তাঁরা তাদের সময়ের কথা তুলে ধরতে পারবে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “রাজ্যে একটা অগণতান্ত্রিক দল চলছে। যাদের কাছে নীতি-নৈতিকতা বলে কিছু নেই। যাঁর নাম প্যানেলে ছিল না। ওয়েটিংলিস্টের শেষের দিকে ছিল। তাঁর চাকরি হয়ে গেল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এর বিচার চাইব।”

পরেশবাবু অবশ্য ওই বিষয়ে কিছু বলতে চান না। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এইসব অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি হয়েছে পরেশবাবুর মেয়ের। বহু মানুষের চাকরি হচ্ছে। বিরোধীদের আসলে বলার মতো কিছু নেই। তাই বিভ্রান্তিকর কথা বলছে। মানুষই তার জবাব দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন