কলকাতার কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের পরে এ বার ডাক্তারি পড়ুয়া ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকলেও চড়া ‘ক্যাপিটেশন ফি’-র বিনিময়ে ওই কলেজে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করেছেন কিছু অভিভাবক। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ মানতে চাননি।
দুর্গাপুরের এই কলেজে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএসের পাঠ্যক্রম চালু হয়। দেড়শো আসনের মধ্যে ৫০টি রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকা এবং বাকি ১০০টি নিট-এর মেধা তালিকা অনুযায়ী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের জয়েন্ট উত্তীর্ণদের কাছ থেকে ভর্তি, পড়াশোনার খরচ-সহ সেমেস্টার পিছু ১ লক্ষ টাকা হিসেবে ন’টি সেমেস্টারের জন্য মোট ৯ লক্ষ টাকা নেওয়া হবে। নিট উত্তীর্ণদের দিতে হবে ৩৬ লক্ষ টাকা।
সম্প্রতি কয়েকজন অভিভাবক কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন, দুর্গাপুরের ওই কলেজে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। মেধা তালিকার নীচের দিকের পড়ুয়াদের মোটা টাকা ‘ক্যাপিটেশন ফি’ নিয়ে ‘ম্যানেজমেন্ট কোটা’য় ভর্তি করছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, যোগ্যতা থাকলেও ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ছেলেমেয়েরা, যা বেআইনি। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে।
আইকিউ-এর পক্ষে আইনজীবী প্রতাপ চট্টোপাধ্যায় আদালতে একটি তালিকা পেশ করেন। দাবি করেন, সেই তালিকায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স এবং নিট-এর র্যাঙ্ক-সহ ১০০ জনের নাম রয়েছে। মেধাতালিকা অনুযায়ী ভর্তি হবে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা নেই।
মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ি জানান, আদালতে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাখিল করা তালিকাই যে আসল, তা যাচাই করার সুযোগ দেওয়া হোক। বিচারপতি সে সুযোগ দিয়ে জানান, শুক্রবার পরবর্তী শুনানি হবে।
ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন এ ভাবে মামলা দায়ের হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ওই বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে আইকিউ সিটি ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফ্রান্সিস অ্যান্টনির দাবি, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ কেন উঠেছে বুঝতে পারছি না। ম্যানেজমেন্ট কোটা বা ‘আগে এলে আগে ভর্তি’ হওয়ার পরিস্থিতি এখন আর নেই। কলেজের ৫০টি আসনে রাজ্য সরকারের গাইডলাইন এবং বাকি একশো আসনে নিট গাইডলাইন অনুযায়ী ভর্তি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’’