CPM Leader Expelled

রাজ্য সিপিএমে ‘ইন্দ্র’পতন! আরও এক বহিষ্কার মহিলাঘটিত অভিযোগে, এ বার রাজ্য কমিটির তরুণ সদস্য

শুক্রবার যখন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হচ্ছে, তখন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত নেতাও। বহিষ্কারের পর তিনি বিশেষ কথা বলেননি। রাজ্য কমিটিতে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতেরাও বিশেষ সরব হননি বলে খবর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মহিলাঘটিত অভিযোগ যেন সিপিএম নেতাদের পিছু ছাড়ছে না! এক পার্টিসদস্যার অভিযোগ নিয়ে তদন্তের পর সিপিএম এ বার বহিষ্কার করল রাজ্য কমিটির সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষকে। শুক্রবার ছিল দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষ দিন। শেষ পর্বে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই তরুণ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

Advertisement

সূত্রের খবর, সেলিম বিশদ ব্যাখ্যার মধ্যে যাননি। শুধু ঘোষণা করে দেন, দলের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে (আইসিসি) যে অভিযোগ জমা পড়েছিল, তাদের সুপারিশেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সূত্রের খবর, ইন্দ্র যেহেতু রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দিল্লিতে সিপিএমের আইসিসির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তারাও বহিষ্কারের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিয়েছে।

শুক্রবার যখন এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হচ্ছে, তখন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত নেতাও। বহিষ্কারের পর তিনি বিশেষ কথা বলেননি। সূত্রের খবর, খানিকটা অনুযোগের সুরে বলার চেষ্টা করেন, তাঁর কথা সে ভাবে শোনা হয়নি। মাত্র এক বার তাঁকে ডেকে কথা বলেছিল আইসিসি। কিন্তু রাজ্য কমিটিতে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতেরাও বিশেষ সরব হননি বলে খবর।

Advertisement

অভিযোগ কী?

বেলঘরিয়ার এক তরুণী সিপিএম কর্মী অভিযোগ করেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছেন ওই নেতা। ঘটনাচক্রে অভিযোগকারিণীর মা এবং বাবাও সিপিএমের সদস্য। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যে কমিটি ময়দানে নামে তারা ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে’ পেয়েছে বলে খবর। আরও একাধিক তরুণী রাজ্য কমিটির ওই সদস্যের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে খবর। ইন্দ্র ভাঙড়ের ভূমিপুত্র হলেও তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল কলকাতাতেই। এসএফআই, ডিওয়াইএফআইয়ের পরে তিনি সিটুর নেতা হয়ে যান। বিভিন্ন ক্ষেত্রের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে ইন্দ্রই সিপিএমের ‘মুখ’ হিসাবে হাজির থাকতেন। অভিযোগ, সেই চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গেও বিভিন্ন ভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তেন তিনি।

গত এপ্রিলে তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে যখন সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস চলছিল, তখনই এক তরুণী ইন্দ্রের বিরুদ্ধে বিবিধ অভিযোগ স্ক্রিনশট-সহ প্রকাশ্যে আনেন। যদিও তার আগে থেকেই ইন্দ্রের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছিল। বেলঘরিয়ার যে তরুণী মূল অভিযোগ করেছিলেন, একটা পর্বে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্তও হয়ে পড়েছিলেন।

গত দেড় বছরে চার চার জন বড় নেতার বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অভিযোগে ব্যবস্থা নিল সিপিএম। প্রথমে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে জেলা সম্পাদক পদ থেকে সরানো এবং তার পর রাজ্য কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলে আলিমুদ্দিন। উত্তর দমদমের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে ৬ মাস সাসপেন্ড করেছিল সিপিএম। গত এপ্রিলে প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীকেও মহিলাঘটিত অভিযোগে বহিষ্কারের পথে হাঁটে সেলিমের নেতৃত্বাধীন সিপিএম। ২০২৫ সাল শেষ হওয়ার আগেই সেই তালিকায় যুক্ত হল ইন্দ্রের নাম। সিপিএমের অনেকের মতে, রাজ্য কমিটির এ হেন সিদ্ধান্তের পরে চাপ বাড়বে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের উপর। কারণ, এই দুই জেলাতেও বেশ কয়েক জনের ক্ষেত্রে এ হেন অভিযোগের তদন্ত চলমান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement