CPM

শক্তি সঞ্চয়ে জোড়া কৌশল সিপিএমের

রাজ্যে করোনা এবং লকডাউন-পর্বের মধ্যে শুক্রবারই প্রথম সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছে সদস্যদের সশরীর উপস্থিতিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০২:০৭
Share:

প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের প্রেক্ষাগৃহে বাম নেতারা। —নিজস্ব চিত্র

করোনা এবং আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। বিধানসভা ভোটের আগে এই পরিস্থিতির ফায়দা নিয়ে জমি শক্ত করতে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভাবে জোড়া কৌশল নিচ্ছে সিপিএম। বিজেপির উত্থান ঠেকাতে কংগ্রেসকে পাশে নিয়ে এ বার একেবারে ব্লক স্তর পর্যন্ত যৌথ কর্মসূচি নিয়ে যেতে চাইছে তারা। একই সঙ্গে ত্রাণের কাজে যে বড় সংখ্যায় তরুণ প্রজন্ম যোগ দিয়েছে, তাদের সাংগঠনিক ভাবে দলের দিকে টেনে আনার লক্ষ্য নিয়েছে তারা।

Advertisement

রাজ্যে করোনা এবং লকডাউন-পর্বের মধ্যে শুক্রবারই প্রথম সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছে সদস্যদের সশরীর উপস্থিতিতে। তবে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব রেখে বসার সুবিধার জন্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বদলে বৈঠক হয়েছে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের প্রেক্ষাগৃহে। বৈঠকে এসেছিলেন ৬৯ জন, উত্তরবঙ্গের কেউ আসতে পারেননি।

জেলার প্রতিনিধিরা এ দিন বৈঠকে জানিয়েছেন, রেশন ও ত্রাণ বিলিতে অনিয়ম, ক্ষতিপূরণের নামে দুর্নীতি বা লকডাউন পালনে নানা ‘খামখেয়ালি’ সিদ্ধান্ত— এ সবের কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। জেলায় জেলায় গণ-বিক্ষোভ বড় চেহারা নিচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির মতো জায়গাতেও বৃহস্পতিবার আব্দুল মান্নান, সুজন চক্রবর্তীদের যৌথ মিছিলে বিপুল ভিড় হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই বামপন্থী নানা সংগঠনের পরিচালনায় ত্রাণ ও অন্যান্য সহায়তা মানুষের কাছে পৌঁছেছে। জবাবি বক্তৃতায় দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে অসন্তোষের সুযোগ নেওয়ার জন্য বিজেপি সব রকম কৌশল কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু বিজেপিকে প্রতিহত করার জন্য বামেদেরও সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে। সেই লক্ষ্যেই দলের প্রতি সূর্যবাবুর বার্তা, অন্যান্য বামপন্থী দল এবং কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ কর্মসূচি নিয়ে যেতে হবে ব্লক, ওয়ার্ড এবং পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত। শুধু শহর বা জেলা সদরে থেমে থাকলে হবে না।

Advertisement

করোনা আবহে এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল তার সংগঠনের অন্দরে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাল। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুক্রবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত সব সদস্যের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য। যে সংস্থা পরীক্ষা করাচ্ছে, কারা রিপোর্ট পাঠাবে সিপিএম দফতরে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট রিপোর্টের প্রতিলিপি দেবে সদস্যদের। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা চিকিৎসর সূর্যকান্ত মিশ্রের ভাবনাতেই এমন উদ্যোগ বলে দলীয় সূত্রের খবর। — নিজস্ব চিত্র

সঙ্কটের সময়ে রক্তদানের আয়োজন, কমিউনিটি কিচেন হোক বা সুলভ ক্যান্টিন, এই ধরনের কাজে তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন প্রায় সব জেলার নেতারাই। এই প্রেক্ষিতেই রাজ্য সম্পাদকের পরামর্শ, কার কোন ধরনের কাজে উৎসাহ বেশি, স্থানীয় স্তরের দলীয় নেতৃত্বকে সেই তথ্য সংগ্রহ করে এই অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের সংগঠনের সঙ্গে জুড়ে নিতে হবে দ্রুত। দীর্ঘসূত্রিতা ফেলে প্রয়োজনে দ্রুত দিতে হবে প্রাথমিক সদস্যপদ। কম বয়সেই দল তাঁদের গুরুত্ব দিতে চাইছে বুঝলে তরুণ প্রজন্মও উৎসাহিত হবে। বুথ স্তরে সংগঠন শক্তিশালী করে ভোট এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে লড়াই চালাতে সুবিধা হবে বলে সূর্যবাবুর মত। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সিপিএম মানে যে তরুণদেরও পার্টি, এই বার্তাটা জনমানসে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন