ঋতব্রতের বিরুদ্ধে আর এগোতে চায় না সিপিএম

বালুরঘাটের যে তরুণী ঋতব্রতের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ এনেছেন, তিনিই রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

বহিষ্কার হয়েছিল প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দাগার দায়ে। বিধি মেনে সেই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করেছে। বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পরেও বিতর্কের জল গড়িয়েছে আরও বহু দূর। ধর্ষণের অভিযোগে সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে সিআইডি। অভিযোগ দায়ের হয়েছে দিল্লি পুলিশেও। কিন্তু বহিষ্কার করে দেওয়ার পরে ঋতব্রতের বিরুদ্ধে আর সংসদীয় কোনও কমিটিতে নালিশ জানাতে চাইছে না সিপিএম।

Advertisement

বালুরঘাটের যে তরুণী ঋতব্রতের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ এনেছেন, তিনিই রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সিপিএমের মধ্যেও একাংশের দাবি ছিল, দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও ঋতব্রত এখনও সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ এসেছে, তাতে সামগ্রিক ভাবে জনপ্রতিনিধিদের ভাবমূর্তিই জনসমক্ষে হেয় হয়েছে। তাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে এথিক্স কমিটির কাছে দরবার করা হোক। তাতে অভিযুক্তের সাংসদ-পদ খারিজ হয়ে গেলে যাবে! কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের অন্য অংশ দলের অন্দরে লড়াই চালিয়ে আপাতত এমন পদক্ষেপ রুখে দিতে পেরেছেন। তাঁদের যুক্তি, ঋতব্রতকে নিয়ে সিপিএমের যা করণীয় ছিল, করা হয়ে গিয়েছে। এর পরে আইন যে পথার চলার, চলবে।

টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঋতব্রত প্রকাশ কারাট-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশকে আক্রমণ করার আগেই তাঁর শাস্তি নিয়ে সিপিএমের অন্দরে এক প্রস্ত বিতর্ক হয়েছিল। তখনই দলের একাংশের দাবি ছিল, সরাসরি বহিষ্কারই করে দেওয়া হোক সাংসদকে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশই গৃহীত হয়। সেই সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটির কোর্টে যাওয়ার আগেই চ্যানেলে বসে দলের শৃঙ্খলা ভেঙে বহিষ্কার ডেকে আনেন ঋতব্রতই! এর পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে আর এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বহিষ্কারে সিলমোহর তো আনুষ্ঠানিকতা। সংসদীয় মঞ্চেও তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কেন করা হবে না?

Advertisement

কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বেরই একাংশের যুক্তি, সিপিএম বহিষ্কার করে দেওয়ার পরে ঋতব্রত এখন দলহীন সাংসদ। সেটাই সংসদীয় নিয়ম। তাঁর জন্য সিপিএমের আর আগ বাড়িয়ে পদক্ষেপের দরকার নেই। তা ছাড়া, সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যাসত্য তদন্তে যাচাই হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনের ছবি ও ভিডিও ক্লিপিংস সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে ওই তরুণীও অনৈতিক কাজ করেছেন। দল হিসাবে সিপিএম কেন এথিক্স কমিটি বা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে ওই তরুণীকে ‘মান্যতা’ দিতে যাবে?

প্রশ্ন করা হলে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য শুধু বলছেন, ‘‘ঋতব্রত আর আমাদের দলের সদস্য নন। তাঁকে নিয়ে আর কিছু বলার নেই!’’ আর বালুরঘাটের তরুণী পুলিশে যাওয়ার পর থেকেই ঋতব্রত অজ্ঞাতবাসে। মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সাড়া মিলছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন