শুধু সরকারের সমালোচনা করলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না বলে বুধবার দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ সংগ্রহে রাজপথে নেমে পড়লেন তাঁরা। ত্রাণ বিলিতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা এবং তৃণমূলের দলবাজির বিরুদ্ধে অহরহ সরব তাঁরা। কিন্তু একই সঙ্গে পথে নেমে সিপিএম নেতৃত্ব বোঝাতে চাইছেন, বন্যা ও ত্রাণ নিয়ে তাঁরা শুধু ‘রাজনীতি’ই করছেন না। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টাও করছেন।
দার্জিলিঙের ধস-বিধ্বস্ত এলাকার জন্য বামেদের ত্রাণ সংগ্রহ অভিযান শেষ হয়েছে সদ্যই। এর মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ায় দলের কর্মীদের প্রাথমিক ভাবে ১২ অগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহের নতুন নির্দেশ দিয়েছে আলিমুদ্দিন। তারই অঙ্গ হিসাবে বৃহস্পতিবার বিকালে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারে বিমান বসু, মধ্য কলকাতার ধর্মতলায় সূর্যকান্ত মিশ্র এবং দক্ষিণের গড়িয়াহাটে মহম্মদ সেলিম— দলের তিন পলিটব্যুরো সদস্য পথে নেমেছিলেন গণসাহায্য জোগাড় করতে। ত্রাণ সংগ্রহ শুরুর আগে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে দাঁড়িয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কখনও বলছেন, সরকারই ত্রাণ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আরও কারও দরকার নেই। কখনও আবার সর্বদল বৈঠক ডাকছেন। মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন, আমরা মানুষের বিপদে পাশেই থাকব।’’
আলিমুদ্দিনে এ দিনই বামফ্রন্টের বৈঠকে বন্যা ও ত্রাণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘দলীয় পতাকা লাগিয়ে তৃণমূল সরকারি ত্রাণ বণ্টন করছে! দল দেখে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।’’ বীরভূমে ‘রেড ক্রস’কেও ত্রাণে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিয়োগ করে বিমানবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে ত্রাণ দেওয়া উচিত ছিল, তা দেওয়া হচ্ছে না। এত বড় বন্যা নিয়ে সরকারের কোনও হেলদোল নেই!’’
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কাল, শনিবার নবান্নে সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এ দিনও বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু জানিয়েছেন, তিনি এখনও বৈঠকের কোনও চিঠি পাননি। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেছেন, এক জন করে মন্ত্রীর নেতৃত্বে পাঁচটি সর্বদল কমিটি গড়া উচিত জেলায় জেলায় ত্রাণের ব্যবস্থা তত্ত্বাবধানের জন্য। বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কে এ দিন ত্রাণ-সাহায্য সংগ্রহের দলীয় শিবিরে হাজির ছিলেন রাহুলবাবুও।