শিক্ষক-নিগ্রহে গৌরবকে শো-কজ সিন্ডিকেটের

শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রনেতা গৌরব দত্ত মুস্তাফিকে আপাতত শুধু শো-কজ বা কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৭
Share:

ভাস্কর দাস। —ফাইল চিত্র।

শিক্ষা শিবিরের সঙ্গে সঙ্গে খোদ শিক্ষামন্ত্রীও তাঁর কড়া শাস্তি চেয়েছিলেন। তবে শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রনেতা গৌরব দত্ত মুস্তাফিকে আপাতত শুধু শো-কজ বা কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এটাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বলে অভিহিত করেছেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে শিক্ষকদের উপরে যাতে এমন ঘটনা আর না-ঘটে, সেই জন্য এই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হল।’’

শুক্রবার সিন্ডিকেটের বৈঠকের পরে উপাচার্য জানান, শিক্ষক ভাস্কর দাসের নিগ্রহের ঘটনার নিন্দা করেছে সিন্ডিকেট। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই ছাত্রকে শো-কজ করা হবে। উপাচার্য আরও জানান, গৌরব স্প্যানিশ সার্টিফিকেট কোর্সের পড়ুয়া। এমন ঘটনা তিনি কেন ঘটিয়েছেন এবং ওই ঘটনার পরে এই কোর্স থেকে কেন তাঁর নাম কেটে দেওয়া হবে না, সেই বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হবে তাঁকে। তার আগে গৌরব কোনও ক্লাস করতে পারবেন না। কারণ দর্শানোর আগে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নেতা গৌরব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন কি? এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান উপাচার্য।

Advertisement

গৌরব ৬ ফেব্রুয়ারি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ভাস্কর দাসকে তাঁর ঘরে ঢুকে চড়থাপ্পড় মেরে নিগৃহীত করেছেন বলে অভিযোগ। উপাচার্য তার পরে ভাস্করবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। ওই শিক্ষকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রীও। তিনি জানিয়েছিলেন, গৌরবের কড়া শাস্তি হবে। ভাস্করবাবু আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় গৌরবের নামে এফআইআর করেন। জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ আনা হলেও আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান ওই ছাত্রনেতা।

এ দিন সিন্ডিকেটের বৈঠক চলাকালীন কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে ছিলেন ভাস্করবাবু। বৈঠকের সিদ্ধান্ত জেনে তিনি বলেন, ‘‘উপাচার্যের উপরে আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি আর কারও দ্বারস্থ হব না।’’ আগে তিনি জানিয়েছিলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না-হলে আদালতে যাবেন। ভাস্করবাবু জানান, এ দিন তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। তবে তিনি অবশ্যই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান।

কিছু দিন আগে উপাচার্যের দফতরের সামনেই উপাচার্যকে নিগ্রহের যে-অভিযোগ উঠেছিল, সেই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ এগোননি। সিন্ডিকেটের এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ‘‘কখনও তো শুরু করতেই হয়। ধরুন, এটা একটা শুরু করা হল।’’

ভাস্কর-নিগ্রহের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটা-ও। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি সভা হয়। সেখানে ছিলেন ভাস্করবাবুও। পরে আবুটা-র বার্ষিক সম্মেলনেও যান তিনি। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘একটি ছাত্র যে-ভাবে ভাস্করবাবুকে হেনস্থা করেছেন, তার সমালোচনার ভাষা নেই। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে ভাল হওয়া প্রয়োজন।’’ শিক্ষা ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন