মেদিনীপুরে ঝড়ে ভেঙে পড়া বাড়ি থেকে শেষ সম্বল উদ্ধারের চেষ্টা। ছবি: পিটিআই।
রাস্তা থেকে সরাতে হবে গাছ। বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে হবে দ্রুত। ঘূর্ণিঝড় আমপানে বিধ্বস্ত নন্দীগ্রামকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে তাই ঘন ঘন সেখানে ছুটছেন প্রশাসনিক কর্তারা। মন্ত্রী, পুলিশ, জেলাশাসক— বাদ নেই কেউ।
সেই জমি আন্দোলনের সময় থেকেই প্রশাসনের চিন্তা নন্দীগ্রাম। রাস্তা আটকে অবরোধ, গুলি-বোমার লড়াই। বছর ১৩ আগে সেই পর্বে বারবার নন্দীগ্রামে ছুটতে হত প্রশাসনিক কর্তাদের। এখনও হচ্ছে। সৌজন্যে আমপান।
বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে নন্দীগ্রাম ১ ও ২ নম্বর ব্লক। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকে। গোটা এলাকা দ্রুত ছন্দে ফেরাতে বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম ১ ব্লক অফিসে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সেই ব্লক অফিসে গিয়েই বৈঠক করেন বিডিও সুব্রত মল্লিক, হলদিয়ার মহকুমাশাসক অবনীত পুনিয়া, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহকারী সভাপতি ও বিদ্যুৎ দফতরের নন্দীগ্রাম সাব সেন্টারের স্টেশন ম্যানেজার। মূলত ত্রাণ বিলি নিয়ে বৈঠক ছিল। বৈঠক মিটতেই শুরু হয় সেই কাজ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় এ দিন নন্দীগ্রামের দুর্গত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন। বিকেলে পৌঁছন জেলাশাসক পার্থ ঘোষ। রাত পর্যন্ত তিনি নন্দীগ্রামে ছিলেন।
গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করতে ব্যস্ত বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে চেষ্টার কসুর করছে না বিদ্যুৎ দফতর। মাঠে নেমেছেন জনপ্রতিনিধিরাও। জমি আন্দোলনের সময় থেকেই প্রশাসনের বাড়তি নজর থাকে নন্দীগ্রামের উপরে। এই দুর্যোগেও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নন্দীগ্রামে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কত? জেলাশাসক বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ চলছে। এখনও চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে আসেনি।’’
নন্দীগ্রামের মতোই লন্ডভন্ড অবস্থা শিল্পশহর হলদিয়ার। শুরু হয়েছে পানীয় জলের আকাল। অভিযোগ, সুযোগ বুঝে শুরু হয়েছে জলের কালোবাজারি। কিছু রাস্তায় এখনও পড়ে রয়েছে গাছ। হলদিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বাসস্ট্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন ঘরহারারা।
উপকূলে ক্ষতি তুলনায় কম। ফলে, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সৈকত শহর দিঘা। হোটেল পর্যটকশূন্য। তবে করোনা-আমপানের জোড়া ফলার প্রভাব নিয়েই সৈকতে জ্বলেছে ত্রিফলা।