সাগরে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, আন্দামান সাগরে জন্মানো ঘূর্ণাবর্তটি ইতিমধ্যেই নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে। আজ, বুধবার সেটি অতি-গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিতে পারে। এমনকী তার পরেও এর শক্তি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন বলেন, ‘‘নিম্নচাপটির শক্তি বাড়ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু থেকে যাচ্ছে।’’ আবহবিদেরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাব্য গতিপথ হতে পারে বাংলা ও ওড়িশা উপকূলের দিকে। তেমনটা হলে এ রাজ্যে যে শুধু বৃষ্টি হবে তা-ই নয়, আসন্ন শীতের কপালেও ঘোর দুর্দিন ঘনাবে। তবে আবহবিদদের অনেকে আবার এ-ও বলছেন, ঘূর্ণিঝড় হোক বা না হোক, অতি-গভীর নিম্নচাপ হলেই সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঠেলে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকবে। আর তাতে বাধা পাবে উত্তুরে হাওয়া। এ দিন সকাল থেকে ভ্যাপসা গরমে তেমনটাই মালুম হয়েছে। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। মায়ানমার তার নাম দিয়েছিল ক্যান্ট। সে দেশের মন উপজাতির ভাষায় তার অর্থ কুমির। সেই কুমির প্রথমে এই রাজ্যের দিকে এলেও, ফিরতি বর্ষার ধাক্কায় সে দক্ষিণ ভারতের দিকে চলে গিয়েছিল। আর সে সময় মধ্য ভারতের শুকনো হাওয়া কুমিরের ভিতরে ঢুকে পড়ে তাকে দুর্বল করে দিয়েছিল।
এই নতুন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রেও তা-ই হবে কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চিত মন্তব্য করতে চাইছেন না মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা। তবে তাঁদের একাংশ বলছেন, সাগরের জলের তাপমাত্রা এখন বেশি রয়েছে। তার ফলে দ্রুত শক্তি বাড়াতে পারে নিম্নচাপটি। শুকনো হাওয়া ঢুকে পড়লেও তাকে খুব বেশি দুর্বল করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, এখন এই ঋতুবদলের সময় সাগর খামখেয়ালি হয়ে রয়েছে। আর তার প্রভাব পড়তে পারে নতুন ঘূর্ণিঝড়টির উপরেও। আচমকা তার শক্তি বাড়তে পারে, বদলে যেতে পারে তার গতিপথও। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল কুমিরের ক্ষেত্রে। এই নতুন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রেও তেমনটা হবে কি না, তা দেখতেই উপগ্রহ চিত্রে টানা নজর রাখছে মৌসম ভবন।