Dengue

ষাট ভাগই ডেঙ্গ২, আরও আক্রমণাত্মক, মত নাইসেডের

গত ১৫ দিনে ওই জেলাগুলির বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আসা ডেঙ্গি রোগীদের রক্তের নমুনা থেকে ১০০০টি নমুনা নিয়ে নগদ টাকা দিয়ে নাইসেডে ‘পলিমেরাস চেন রিঅ্যাকশন’ (পিসিআর) পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

ফাইল চিত্র।

যা আন্দাজ করা গিয়েছিল, তার উপরেই সিলমোহর দিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস (নাইসেড)।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গি কার্যত মহামারির আকার নেওয়ার পর থেকেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছিলেন, ডেঙ্গির চার ধরনের ভাইরাসের প্রজাতির মধ্যে ডেঙ্গ২ এ বার উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, নদিয়া— সর্বত্র বেশি দেখা যাচ্ছে। তাঁদের অনুমান যথার্থ কি না জানতে গত ১৫ দিনে ওই জেলাগুলির বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আসা ডেঙ্গি রোগীদের রক্তের নমুনা থেকে ১০০০টি নমুনা নিয়ে নগদ টাকা দিয়ে নাইসেডে ‘পলিমেরাস চেন রিঅ্যাকশন’ (পিসিআর) পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর।

আরও পড়ুন: গুরুঙ্গকে ধরা দিতে নির্দেশ

Advertisement

স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কথায়, ‘‘নাইসেড থেকে পাওয়া অন্তর্বর্তী রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ৬৫%-এর বেশি নমুনায় ডেঙ্গ২ ভাইরাস মিলেছে। এটি তুলনায় একটু বেশি আক্রমণাত্মক। চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।’’ নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত-ও বলেন, ‘‘এ রাজ্যে মূলত ডেঙ্গ১ এবং ডেঙ্গ৩ পাওয়া যেত। গত বছর কিছু ডেঙ্গ২ মিলেছিল। কিন্তু এ ভাবে ৬০ শতাংশের বেশি রোগীর দেহে ডেঙ্গ২ আগে মেলেনি।’’

কেন এটা হল? শান্তাদেবীর ব্যাখ্যা, ‘‘একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এক বা দু’ধরনের ভাইরাস কয়েক বছর ধরে বেশি পাওয়া গেলে ক্রমশ মানুষের শরীরে সেই ভাইরাসের প্রতি প্রতিরোধ তৈরি হয়। সেটাই সম্ভবত ডেঙ্গ১ এবং ডেঙ্গ৩ এর ক্ষেত্রে হয়েছে। ওই ভাইরাস এই অঞ্চলের মানুষের দেহে ঢুকে কোষবৃদ্ধি করতে পারছে না, যেটা ডেঙ্গ২ পারছে।’’

ডেঙ্গ২-এর আধিক্যে চিন্তিত স্বাস্থ্যকর্তারাও। কারণ, বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয়-আন্তর্জাতিক একাধিক গবেষণা সূত্রের খবর— এক বার যাঁদের ডেঙ্গি হয়েছে, তাঁদের যদি দ্বিতীয় বার ডেঙ্গ২ ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমণ হয়, তা হলে রোগের প্রাবল্য বহু গুণ বেড়ে যাবে। শরীরে রক্তক্ষরণের আশঙ্কাও এতে বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানান, ভারত-সহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এডিস ইজিপ্টাই মশাদের মধ্যে ডেঙ্গ২ প্রজাতির ভাইরাস বহনের ক্ষমতা অনেক বেশি।

স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন সূত্রের খবর, ২০১৪ সাল থেকেই ডেঙ্গ২ ভাইরাস তুলনায় বেশি মিলছিল। সেই বছর কলকাতার ২৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের রক্তের সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা করে ২০ জনের রক্তে ডেঙ্গ২ মিলেছিল। ২০১৫-এ কলকাতার ৪০ জনের রক্তের সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা করে ১৭ জনের ক্ষেত্রে ডেঙ্গ২ মেলে। ২০১৪ থেকে কলকাতায় এমন একাধিক রোগী মিলেছে, যাঁদের দেহে ডেঙ্গ২ এর সঙ্গে ডেঙ্গ১ বা ডেঙ্গ৩ এর ভাইরাস একসঙ্গে মিলেছে। ২০১৬-তে ডেঙ্গ২ প্রথম দেখা যায় হুগলির শ্রীরামপুরে। সেখানে ডেঙ্গি মহামারির রূপ নিয়েছিল। এ বছর উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাতেও ডেঙ্গ২ পাওয়া গেল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement