দাবি সিবিআই তদন্ত, দাড়িভিট স্কুল আটকে ধর্নায় রাজেশ-তাপসের মা

ঠিক ছিল, স্কুল খোলানো নিয়ে বৈঠকটি হবে সোমবার সকালে, দাড়িভিট স্কুলের সামনে। সেই মতো স্কুল পরিচালন কমিটির দু’জন সদস্য এবং বেশ কয়েক জন অভিভাবকও হাজির হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাড়িভিট ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৯
Share:

ধর্না: দাড়িভিট হাইস্কুলের গেটে রাজেশ ও তাপসের মা। —নিজস্ব চিত্র।

ঠিক ছিল, স্কুল খোলানো নিয়ে বৈঠকটি হবে সোমবার সকালে, দাড়িভিট স্কুলের সামনে। সেই মতো স্কুল পরিচালন কমিটির দু’জন সদস্য এবং বেশ কয়েক জন অভিভাবকও হাজির হন। এর মধ্যেই স্কুলের দরজার সামনে ধর্না শুরু করেন রাজেশ সরকারের মা ঝর্নাদেবী এবং তাপস বর্মণের মা মঞ্জুদেবী। সঙ্গে কয়েক জন গ্রামবাসী। দাড়িভিট কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত দাবি করে দুই নিহতের মা একযোগে জানান, যত দিন না এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তত দিন প্রয়োজনে তাঁরা রোজ স্কুলের সামনে ধর্নায় বসবেন। তাঁদের সাফ কথা, ‘‘ছেলেদের তো মেরেইছে। এ বার স্কুল খুলতে গেলে মায়েদের লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে!’’

Advertisement

এ দিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজেশের বাবা নীলকমল ও তাপসের বাবা বাদল। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মতো বিজেপি নেতারা। নীলকমল ও বাদল এ দিন দাড়িভিট কাণ্ড নিয়ে সবিস্তারে জানান রাষ্ট্রপতিকে। বিজেপি নেতাদের আর্জি, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হোক।

এই টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে স্কুলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। স্থানীয় বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেছেন, ‘‘স্কুল না খুললে পড়ুয়াদের সমস্যা যে তীব্র হবে, সেটা সকলকেই বুঝতে হবে। আলোচনা করেই একটা রাস্তা বার করতে হবে।’’ যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দু’-চার দিন স্কুল বন্ধ থাকলে ক্ষতি হবে না। কিন্তু ওখানে মানুষের ক্ষোভ কমেনি।’’

Advertisement

সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল এ দিন সকালে, দাড়িভিট স্কুলের সামনের জমায়েতে। যে জমায়েতে মধ্যমণি ছিলেন ঝর্ণাদেবী এবং মঞ্জুদেবী। ছেলেদের ছবি হাতে তাঁরা সকাল দশটা থেকে দুপুর দেড়টা অবধি বসেছিলেন স্কুলের সামনে। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরাও চাই স্কুল খুলুক। কিন্তু, সিবিআই তদন্ত না হলে দোষীরা ধরা পড়বে না। তাই আগামী দিনে আর কোনও মায়ের কোল যাতে খালি না হয়, সেটা নিশ্চিত করাতেই আন্দোলন করছি।’’
তাঁদের জোর করে হঠিয়ে দিতে গেলে তার ফল যে ভাল হবে না, তা-ও বুঝিয়ে দেন তাঁরা।

স্কুলের সামনের মাঠে সকালেই হাজির হয়েছিলেন পরিচালন সমিতির দুই সদস্য এবং জনা পঁচিশেক অভিভাবক। কিন্তু মায়েদের ধর্নায় বসতে দেখে গোলমালের আশঙ্কায় বৈঠক স্থগিত করে প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতি জানান, তিনি বিশেষ কারণে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ও নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে যা দাবি করেছেন, তা নিয়ে আশ্বস্ত করার জায়গায় আমি নেই। কাজেই বৈঠকে গিয়েও লাভ হত না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পরে যাতে বৈঠক করা যায়, সে ব্যাপারে ওই এলাকার লোকেদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’

এরই মধ্যে আগামী ৬ অক্টোবর ইসলামপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডাকে নিয়ে সভা করার কথা বিজেপি। সেই সভার অনুমতি না পেলে আইন অমান্য করা হবে বলে জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সিবিআই তদন্ত দাবি করে এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন এবিভিপি-র সদস্যরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন