স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা, জওয়ানের দেহ পৌঁছল নন্দীগ্রামে 

ফোর্ট উইলিয়াম থেকে সহযোদ্ধারা কফিনে শায়িত বুদ্ধদেবের দেহ নিয়ে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। বুদ্ধদেবের স্ত্রী রেখা অন্তঃসত্ত্বা। বুদ্ধদেব-রেখার একটি চার বছরের মেয়েও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:১৭
Share:

জওয়ানের কফিন কাঁধে সহযোদ্ধারা। রবিবার গ্রামে। ইনসেটে, বুদ্ধদেব পন্ডা।

দুর্গা পুজোর আগেই বাড়ি আসবে বলেছিল ছেলে। এল ঠিকই। কিন্তু কফিনবন্দি হয়ে।

Advertisement

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের চিল্লো গ্রামে পৌঁছয় জওয়ান বুদ্ধদেব পণ্ডার (২৬) দেহ। ফোর্ট উইলিয়াম থেকে সহযোদ্ধারা কফিনে শায়িত বুদ্ধদেবের দেহ নিয়ে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। বুদ্ধদেবের স্ত্রী রেখা অন্তঃসত্ত্বা। বুদ্ধদেব-রেখার একটি চার বছরের মেয়েও রয়েছে। পরিবার সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের লখনউতে কর্মরত ছিলেন বুদ্ধদেব। ঠিক ছিল, এ বার পুজোয় বাড়িতে আসবেন। কিন্তু মুহূর্তে ওলোটপালোট হয়ে গেল সবকিছু।

কী ভাবে মৃত্যু হল বুদ্ধদেবের?

Advertisement

সেনাবাহিনীর সূত্রে জানানো হয়েছিল, শুক্রবার সেনা ছাউনিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে নন্দীগ্রামের যুবকের। এ দিন দেহ পৌঁছতেই ভিন্ন সুর পরিজনদের মুখে। জওয়ানের জেঠু কানু পণ্ডা বলেন, ‘‘আমরা যতটুকু জানি, বেশ কিছুদিন আগে ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। তারজন্য তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।’’ কানু আরও জানিয়েছেন, শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সপ্তাহ দুয়েক আগে লখনউ ফিরে গিয়েছিল ভাইপো। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কাজে যোগ দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যু! মৃতের মা প্রতিমার দাবি, ‘‘রোজ একই জায়গায় কাপড় মেলে। কী ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হল?’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুদ্ধদেব ছিলেন পরিবারের বড় ছেলে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বছর ছয়েক ধরে কাজ করছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে পাশের গ্রামের রাখিকে বিয়ে করেছিলেন বুদ্ধদেব। বাসুদেব পণ্ডারর দাবি- শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ সেনাবাহিনী থেকে ফোন করে বলা হয়েছিল, ছেলে মারা গিয়েছে।খবর শোনার পর ক্ষতি হয়ে যেতে এই আশঙ্কায় রাখিকে সেনাবাহিনীর তরফে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এ দিন দেহ পৌঁছনোর আগে হাসপাতাল থেকে কয়েক মিনিটের জন্য আনা হয়েছিল রাখিকে। স্বামী দেহ দেকে নিজেকে সামলাতে পারেননি তিনি। ছেলের দেহ দেখে বারবার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন বুদ্ধদেবের মা-ও।গ্রামেও ছিল শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা ব্যস্ত ছিলেন বুদ্ধদেবের বাবা-মাকে আগলাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন