West Bengal Panchayat Election 2023

হাঁটু গেড়ে পরাজিতের আর্তি, বাঁচান আমাদের!

বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “বিজেপি করার অপরাধে তৃণমূল কর্মী ছেলে বাবাকে খুন পর্যন্ত করে দিচ্ছে। জেলায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।”

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

বামনগোলা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ০৮:১৮
Share:

মালদহের বামনগোলা থানার আইসি জয়দীপ চক্রবর্তীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বাঁচানোর আর্জি বিজেপির জেলা পরিষদের পরাজিত প্রার্থী বীণা কীর্তনিয়ার। —নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন থানার আইসি। তাঁর সামনে মাটিতে হাঁটু মুড়ে হাত জোড় করে দলের কর্মীদের বাঁচানোর আর্জি জানাচ্ছেন বিজেপির জেলা পরিষদের এক পরাজিত প্রার্থী। রবিবার প্রথমে নিজের বাড়িতে এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ঘটনার জেরে স্থানীয় স্তরে বিক্ষোভ এবং তার পরে বিজেপি প্রার্থীর এই আর্জির ছবি ঘিরে রবিবার উত্তপ্ত হল মালদহের বামনগোলার কিয়ানদিঘি গ্রাম। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের বৌমা অভিযুক্ত শর্মিলা মার্ডিকে আটক করা হয়েছে। মৃতের ছেলে বিপ্লব ঘটনার পর থেকে ফেরার বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, কিয়ানদিঘি গ্রামের বিজেপি কর্মী বুড়ন মুর্মুর (৬০) বৌমা শর্মিলা মার্ডি স্থানীয় মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে হেরে যান। এ দিন সকালে শোয়ার ঘর থেকে বুড়নের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিজেপির অভিযোগ, বৌমার হয়ে প্রচার না করায় বিজেপি কর্মী বুড়নকে মারধর করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেহ উদ্ধারে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিলে ঝাঁটা হাতে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী, সমর্থকেরাও। এর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বামনগোলা থানার আইসি জয়দীপ চক্রবতী। তাঁকে দেখতে পেয়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পুলিশের সামনে দলের কর্মীদের বাঁচানোর আর্জি জানান বিজেপির জেলা পরিষদের পরাজিত প্রার্থী বীণা কীর্তনিয়া। বিজেপির সক্রিয় কর্মী হওয়ায় বুড়নকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির জয়ী প্রার্থী জয়ন্তী মুর্মুও।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃতের বৌমা শর্মিলা। তিনি বলেন, “শ্বশুরমশাইকে আমরা খুন করিনি। আমরা তৃণমূল করি বলে বিজেপি জেতার পর থেকে নানা হুমকি দিচ্ছে। এখন শ্বশুরমশাইয়ের মৃত্যুতে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।” অন্য দিকে, পুলিশ আধিকারিকের সামনে বীণার হাঁটু মুড়ে আর্জিকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করে তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু বলেন, “পারিবারিক ঘটনাকে বিজেপি রাজনৈতিক রং দিচ্ছে। পুলিশের সামনে হাঁটু মুড়ে বসে বিজেপির নেতা, নেত্রীরা নাটক করছেন।’’ যদিও বীণা বলেন, “বিজেপি কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কর্মীদের বাঁচানোর জন্য পুলিশের পায়ে পড়তে হচ্ছে।”

Advertisement

বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “বিজেপি করার অপরাধে তৃণমূল কর্মী ছেলে বাবাকে খুন পর্যন্ত করে দিচ্ছে। জেলায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।”

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বুড়ন নিজের জমিতে চাষবাস করতেন। সকালে তাঁর দেহ উদ্ধারের পরে ময়না-তদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “ময়না-তদন্তের পরে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এ দিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন