শিক্ষকপদ রূপান্তরে আইন বদলের দাবি

ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমালের ঘটনায় বিতর্কিত ‘কনভার্সন’ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, রূপান্তর আইন তৈরি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তখনকার শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতির সঙ্গে এখনকার পদ্ধতির কোনও মিল নেই।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সহশিক্ষক পদের ‘কনভার্সন’ বা রূপান্তরের ক্ষেত্রে বলবৎ রয়েছে ১৯৯৪ সালের আইন! এটা কী করে সম্ভব, সেই প্রশ্ন উঠছে। দ্রুত আইন বদলের দাবি তুলেছে শাসকপন্থী শিক্ষক সংগঠনও।

Advertisement

ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমালের ঘটনায় বিতর্কিত ‘কনভার্সন’ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, রূপান্তর আইন তৈরি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তখনকার শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতির সঙ্গে এখনকার পদ্ধতির কোনও মিল নেই। তাই রূপান্তরের চূড়ান্ত ক্ষমতা ডিআই বা স্কুল পরিদর্শকদের হাত থেকে নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা স্কুলশিক্ষা দফতরের হাতে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন শিক্ষা শিবিরের অনেকে। যদিও ওই শিবিরেরেই অন্য অংশের বক্তব্য, আইন অপরিবর্তিত রেখে দুর্নীতি বন্ধ করা দরকার।

১৯৯৪ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন বাম সরকার নির্দেশিকা দেয়, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকপদের অনুমোদন থাকলে সেই পদের বিলুপ্তি ঘটিয়ে প্রয়োজনে উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক নেওয়া যেতে পারে। তবে স্কুলের মোট শিক্ষকপদ অপরিবর্তিত রাখতে হবে। এটাকেই বলে ‘পোস্ট কনভার্সন’ বা পদ রূপান্তর। এই ক্ষমতা দেওয়া হয় ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর বা ডিআই-দের। এ ক্ষেত্রে স্কুলশিক্ষা দফতরের অনুমতির কোনও প্রয়োজন নেই।

Advertisement

কিন্তু সেই সময় সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ করত স্কুলের পরিচালন সমিতিই। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) তখনও তৈরি হয়নি। পরবর্তী ক্ষেত্রে কমিশন তৈরি হয়। সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয় পরীক্ষা ও নিয়োগ পদ্ধতির। কিন্তু পদ রূপান্তর আইন অপরিবর্তিত রয়ে গিয়েছে।

এখনকার নিয়োগ পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করলে আইনে ভুল ধরা পড়ছে বলে জানান কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমার্স্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস। তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগের পুরো পদ্ধতিরই পরিবর্তন হয়েছে। পুরনো আইনের কোনও মানেই হয় না। স্কুলশিক্ষা দফতরকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা উচিত।’’

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগপত্র দেয়। সারা বছর স্কুলের যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে পর্ষদ যুক্ত থাকে। তাই পুরনো নিয়ম পরিবর্তন করে গোটা বিষয়ের সঙ্গে পর্ষদকে যুক্ত করা উচিত।

যদিও বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটিয়ে স্কুলগুলিকেই এই প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দেওয়া উচিত। কনভার্সনের জন্য দফতরকে যুক্ত করলে বছর পার হয়ে যাবে, কনভার্সন আর হবে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন