সে দিন গীতা মাহালির বাড়িতে অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
একই ঘরদোর।
একই উঠোন। একই ধরনের ভিড়। সাত দিনের ব্যবধানে সেখানে পদ্মফুলের বদলে ঘাসফুলের ছড়াছড়ি। সংক্ষেপে এটাই বুধবার সকালে নকশালবাড়ির কোটিয়াজোতের মাহালি পরিবারের ছবি।
গত ২৫ এপ্রিল যে দাওয়ায় বসে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, এ দিন সেখানে মাহালি কর্তা-গিন্নিকে পাশে নিয়ে চা খেলেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব। তার পরে দু’জনের হাতে তুলে দিলেন দলের পতাকা। গৌতমবাবুর দাবি, ‘‘রাজুর দাওয়ায় পাত পেড়ে খাওয়ার জেরে ওঁর স্বাভাবিক জীবনযাপন লাটে উঠেছিল। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে উনি আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর, রাজু ও তাঁর স্ত্রী গীতার আবেদনের ভিত্তিতে দু’জনকেই কোনও সরকারি প্রকল্পে সহায়ক হিসেবে কাজ দেওয়া হবে।
তা নিয়ে গৌতমবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সময়ই সব বলবে।’’
রাজুরা ‘হাতছাড়া’ হওয়ায় বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশ যেমন ‘অপহরণ’-এর অভিযোগ তুলেছেন, তেমনই আর এক পক্ষ প্রশ্ন তুলেছেন, কেন রাজুদের ধরে রাখা গেল না। যদিও বিজেপির শিলিগুড়ির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রবীণ অগ্রবালের দাবি, ‘‘আমাদের দলের লোকেরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিল। কিন্তু তৃণমূল ওই পরিবারকে ভয় দেখিয়ে, অপহরণ করে দলে যোগদান করিয়েছে।’’ এই কথার পিছনে তাঁদের যুক্তি, ‘‘আজ রাজু আর গীতার মুখটা দেখুন। কেমন ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে!’’
আরও পড়ুন: জেলের ভয় পাই না, পাল্টা হুঙ্কার দিলেন মমতা
মাহালি দম্পতি কিন্তু অপহরণের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন। দু’জনেই জানান, তাঁরা এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাজুর এক আত্মীয় জানান, দিল্লির নেতা খেয়ে যাওয়ার পরে ঘরদোর সারানো কিংবা কোনও স্থায়ী কাজের আশায় রাজু অনেকের কাছে গিয়েও খালি হাতে ফিরেছেন। তার পর থেকেই তিনি হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তখনই গৌতম দেব রাজুকে ডেকে পাঠিয়ে কথাবার্তা বলেন। আর রাজু বলছেন, ‘‘সব তো হাটের মধ্যে বলা যায় না। এটা বলতেই পারি, ভাল লেগেছে তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’