পশ্চিমের ছিনতাইবাজ নিম্নচাপের হাত থেকে বর্ষাকে বঙ্গে ঢুকিয়ে দিয়েছিল বঙ্গোপসাগরের এক দুরন্ত নিম্নচাপ। আবার সাগরের অন্য এক ‘অতিথি’র হাত ধরেই কি গাঙ্গেয় বঙ্গে ঘুরে দাঁড়াবে বর্ষা? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অন্দরে এখন এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই চড়া রোদ ছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু দুপুর গড়াতেই দু’দফার বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় মহানগর এবং গাঙ্গেয় বঙ্গের কয়েকটি জেলা। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই এই বৃষ্টি। আজ, শনিবারেও কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।
আবহবিদদের একাংশের মতে, জুনে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে তেমন জোরালো বর্ষণ হয় না। এই সময়ে জোরদার বৃষ্টির জন্য ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের প্রয়োজন হয়। নতুন ঘূর্ণাবর্ত এ বার বর্ষাকে কতটা শক্তি জোগাবে, সেটাই দেখার। ‘‘ঘূর্ণাবর্তটি আছে বাংলাদেশ সীমান্তে। সেটি কোন দিকে যাবে, তার উপরেই চলতি মাসে বঙ্গের বর্ষাভাগ্য অনেকটা নির্ভর করছে,’’ বলেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।
রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, এ দিন ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জায়গায় ছোট ছোট বজ্রগর্ভ মেঘ দানা বেঁধেছিল। বেলা ৩টে থেকে ৪টে পর্যন্ত প্রায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বর্ষণে মহানগরের রাস্তায় জল জমে যায়। সকাল থেকে রোদ আর আর্দ্রতায় অস্বস্তি থাকলেও ভারী বৃষ্টির পরে তা অনেকটাই কমে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে আবহাওয়া ছিল মনোরম।
চলতি মরসুমে বর্ষা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পরে। কিন্তু সেই আবির্ভাবটাও ছিল নেহাতই খাতায়-কলমে। সে আসার পরেও গরমের অস্বস্তিই দাপট দেখাচ্ছিল। ফলে বর্ষা আদৌ ঢুকেছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন অনেকে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বুধবার একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে হাজির হওয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ দিন ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হওয়ায় বর্ষা কিছুটা জোর পেয়েছে। কিন্তু এই জোর থাকবে কত দিন?
আলিপুর হাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আজ, শনিবার ঘূর্ণাবর্তটির মতিগতি আরও স্পষ্ট হবে। এই বৃষ্টি আরও চলবে, নাকি আবার গরমের অস্বস্তির কবলে পড়তে হবে— সেটা তখন আরও নির্দিষ্ট ভাবে বোঝা যাবে।