ভাঙা ঘরে একা।—নিজস্ব চিত্র।
স্থায়িত্ব মাত্র কয়েক সেকেন্ড।
নিমেষেই উপড়ে গেল আস্ত একটা গাছ। উড়ে গেল বাড়ির টিন। আহতও হলেন বেশ কয়েকজন। বুধবার আকাশ কালো করে ঘুরতে ঘুরতে আসা জড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার কুমারপুর গ্রামে। বিডিও মানস মণ্ডল জানান, ঝড়ের খবর পেয়ে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছিল সোহাই-শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের কুমারপুর গ্রামে। প্রাথমিক ভাবে ১০-১২ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। ওই সব পরিবার যাতে সরকারি নিয়ম মতো ক্ষতিপূরণ পান তা দেখা হচ্ছে।
এ দিন সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝড় শুরু হয়। কুমারপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দেখতে দেখতেই টুপ-টাপ বাড়ির চাল উড়ে যেতে থাকে। গাছ ভেঙে পড়তে থাকে। চোখের সামনে এই অবস্থা দেখে ততক্ষণে গ্রামে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। গ্রামবাসী জাকির হোসেন বলেন, ‘‘প্রচণ্ড একটা শব্দ হচ্ছিল। যেন প্লেন ভেঙে পড়ছে। নিমেষের মধ্যে ঘরের টিন উড়ে গিয়ে এমন ভাবে বাড়ির সামনের গাছে লাগল। তাতে গাছটি কেটে দু’টুকরো হয়ে যায়।’’
মুখ থুবড়ে পড়ে গাছ। দেগঙ্গায় সজল চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
শব্দ শুনে এবং চোখের সামনে সামান্য টিনের ধাক্কায় গাছ দু’ভাগ হতে দেখে জ্ঞান হারান আমেলা বিবি, সাহাবুদ্দিন মণ্ডল। কুমারপুরে তাণ্ডব চালিয়ে এরপর ঝড় পাশের নুননগর পঞ্চায়েতের রামপুর গ্রামে গিয়ে আছড়ে পড়ে। ওই সময় কাদের বৈদ্য নামে এক বাসিন্দা পুকুরে মাছ ধরা দেখছিলেন। কাদেরের কথায়, ‘‘হঠাৎ প্রচণ্ড একটা শব্দ শুনে সামনের দিকে তাকাতেই দেখি মাঠের উপর দিয়ে উপরের দিকে উঠে যাওয়া একটা কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। তা দেখে পুকুরে লাফ দিই।’’ দেগঙ্গার কার্তিকপুর আদর্শ বিদ্যাপীঠের সামনে একটি বহু পুরনো অশ্বত্থ গাছ ছিল। ঝড়ের দাপটে গাছটি ভেঙে পড়লে টাকি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই গাছের তলায় দু’টি ভ্যান রিকশা এবং একটি দোকান চাপা পড়ে। এ দিন বিকেল থেকে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায় প্রবল বেগে ঝড় ও সেই সঙ্গে বৃষ্টি হয়। বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতি হয়েছে, গাছ ভেঙেছে। বাঁধের অবস্থাও ভাল নয়। মানুষের আশঙ্কা, যে ভাবে তীব্র বেগে ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে, নদীর জল বাড়ছে তাতে যে কোনও সময় বাঁধ ভাঙতে পারে।
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
ঘুর্ণিঝড় আসল তেড়ে