দুষ্কৃতীদের গুলি, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন তৃণমূল নেতা

দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলি থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন হুগলি জেলা তৃণমূলের সহ-সম্পাদক কালু রহমান। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চন্দননগরের নবগ্রামের কাছে একটি ইটভাটার সামনে। দু’টি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তাঁর গাড়িতে লাগে। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছিল বলে সন্দেহ ওই তৃণমূল নেতার। সিপিএম অভিযোগ মানেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

এই গাড়িতেই গুলি চালানো হয়। ছবি: তাপস ঘোষ।

দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলি থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন হুগলি জেলা তৃণমূলের সহ-সম্পাদক কালু রহমান। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চন্দননগরের নবগ্রামের কাছে একটি ইটভাটার সামনে। দু’টি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তাঁর গাড়িতে লাগে। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছিল বলে সন্দেহ ওই তৃণমূল নেতার। সিপিএম অভিযোগ মানেনি।

Advertisement

এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ বলেন, “উনি খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পোলবার রাজহাটের বাসিন্দা কালু রহমান পেশায় কয়লা ব্যবসায়ী। তিনি বিভিন্ন ইটভাটায় কয়লা সরবরাহ করেন। প্রতি শুক্রবার পাওনা আনতে যান। এ দিন নবগ্রামের একটি ইটভাটা থেকে পাওনা নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। ভাটার ঠিক বাইরে গাড়ি দাঁড় করানো মাত্র একটি নম্বরহীন মোটরবাইকে দুই দুষ্কৃতী সামনে চলে আসে। তারা টাকা দাবি করে। ওই তৃণমূল নেতা ছিলেন চালকের আসনে। পাশে ছিলেন গাড়ির চালক। কালু রহমান ‘টাকা নেই’ বলায় বাইকের পিছনে বসা এক দুষ্কৃতী গুলি চালায়। কালু রহমান তখন গাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন। গুলিটি গাড়ির সামনের কাচ ফুটো করে পিছনের সিটে গিয়ে পড়ে। এর পরে কালু রহমান যখন গাড়ি থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসেন, তখন বাইকের চালকের আসনে বসে থাকা দুষ্কৃতী সরে এসে তাঁকে লক্ষ করে গুলি চালায়। সেই গুলিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গাড়ির পিছনের ডান দিকের দরজায় লাগে।

Advertisement

গুলির আওয়াজে ভাটার ম্যানেজার সমর বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে আসেন। কী হয়েছে জানতে চাওয়ায় এক দুষ্কৃতী তাঁর দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেই গুলি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বেরোয়নি। সমরবাবুর চিৎকারে ভাটাকর্মীরা ছুটে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে দুই দুষ্কৃতী বাইক নিয়ে পালাতে থাকে। ধাওয়া করেন ভাটাকর্মীরা। রাস্তা এবড়ো-খেবড়ো থাকায় একটু এগিয়েই দুষ্কৃতীদের বাইকটি উল্টে যায়। পিছনে লোকজন আসতে দেখে দুষ্কৃতীরা একটি আমবাগানের মধ্যে দিয়ে পালায়।

দিনে-দুপুরে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় নবগ্রামে। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন এসডিপিও এবং ভদ্রেশ্বরের ওসি দেবনাথ সাধুখা।ঁ তৃণমূল নেতার গাড়ি এবং রাস্তা থেকে দু’টি গুলির খোল ছাড়াও দুষ্কৃতীদের মোটরবাইক এবং একটি হেলমেট উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই তৃণমূল নেতা বলেন, “দুষ্কৃতীদের বয়স ২৮-৩০ এর মধ্যে। এক জনের মাথা হেলমেটে ঢাকা ছিল। অন্য জনকে চিনি না। ব্যবসায়িক শত্রুতা কারও সঙ্গেই নেই। মনে হচ্ছে রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃৃতীরা আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তোলেন। কালু রহমানের অভিযোগ উড়িয়ে চন্দননগর পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গোপাল দাসের দাবি, “মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের ছেলেদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” তিনি বলেন, “ওই তৃণমূল নেতা তো চন্দননগরের বাসিন্দাই নন। তাঁকে কেন আমাদের ছেলেরা মারতে যাবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন