নিষেধাজ্ঞা উঠল, সুবিধা মিলবে দুই শিল্পতালুকে

হাওড়ার সাঁকরাইল শিল্প পার্ক এবং জঙ্গলপুর শিল্পতালুকে জমির মালিকানা হস্তান্তর ও চরিত্র পরিবর্তনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল সাত বছর আগে, বাম জমানায়। এত দিনে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এর ফলে ওই দুই তালুকের আটশোরও বেশি ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগী সরকারের কাছ থেকে আর্থিক ও পরিকাঠামোগত সুবিধা পাবেন। সরকারি সূত্রের খবর, ওই দুই শিল্পতালুকে মোট ৪৭০০ বিঘা জমি রয়েছে।

Advertisement

সুপ্রকাশ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

হাওড়ার সাঁকরাইল শিল্প পার্ক এবং জঙ্গলপুর শিল্পতালুকে জমির মালিকানা হস্তান্তর ও চরিত্র পরিবর্তনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল সাত বছর আগে, বাম জমানায়। এত দিনে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এর ফলে ওই দুই তালুকের আটশোরও বেশি ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগী সরকারের কাছ থেকে আর্থিক ও পরিকাঠামোগত সুবিধা পাবেন।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, ওই দুই শিল্পতালুকে মোট ৪৭০০ বিঘা জমি রয়েছে। তার মধ্যে ১৭৫০ বিঘা এক প্রোমোটার কিনেছিলেন জমির ঊর্ধ্বসীমা (২৪ একর) আইন না-মেনেই। তিনি সেই জমি বিভিন্ন শিল্প সংস্থার কাছে বিক্রিও করে দেন। পরে এই নিয়ে অভিযোগ ওঠায় ২০০৭ সালে তৎকালীন বাম সরকার দুই শিল্পতালুকের সব জমির মালিকানা হস্তান্তর ও চরিত্র পরিবর্তনের উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

যে-সব সংস্থা ওই দুই শিল্পতালুকে জমি কিনেছিল, সরকারি নিষেধাজ্ঞার জন্য তারা নানা ভাবে সমস্যায় পড়ছিল। যেমন: l তারা ব্যাঙ্ক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারছিল না। l এই ধরনের শিল্পের জন্য সরকার রাস্তাঘাট, আলো, জমির উন্নয়নের মতো যে-সব পরিকাঠামো তৈরি করে দেয় এবং যে-ভর্তুকি দেয়, তা থেকেও সংস্থাগুলি বঞ্চিত হচ্ছিল। l শিল্প গড়তে রাজ্যের পরিবেশ দফতরের যে-ছাড়পত্র লাগে, তা পেতেও নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছিল।

Advertisement

রাজ্যের ছোট ও মাঝারি শিল্প ফেডারেশন (ফসমি) ও সাঁকরাইল শিল্প পার্কের সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “কৃষিজমির চরিত্র পরিবর্তনের অধিকার এবং জমির মালিকানা নিজেদের হাতে না-থাকায় বিভিন্ন দিক থেকেই সমস্যা হচ্ছিল। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সমস্যা মিটবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

এ বার দুই শিল্পতালুকে দু’ভাবে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানান এক সরকারি মুখপাত্র। প্রথমত, জমির ঊর্ধ্বসীমা আইনের আওতার বাইরে না-গিয়ে যাঁরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন, হাওড়া জেলাশাসকের কার্যালয়ে চালু হওয়া ‘ইউনিক ক্লিয়ারেন্স সেল’ থেকে তাঁদের জমির চরিত্র বদল ও মালিকানা বদল সংক্রান্ত দলিল মঞ্জুর করা হবে। দ্বিতীয়ত, যে-সব সংস্থা প্রোমোটারের কাছ থেকে জমি কিনেছিল, তারা সরকারের কাছে আবেদন করবে। প্রতিটি আবেদন পরীক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদি লিজে জমির মালিকানা দেওয়া হবে। জরিমানা হিসেবে সরকারকে সামান্য ‘সেলামি’ দিতে হবে ওই সব সংস্থাকে।

সরকারি মুখপাত্র জানান, শিল্প গড়ার জন্য ২০০০ সালের গোড়া থেকেই দুই তালুকে জমি কেনার ধুম পড়ে গিয়েছিল। সেই সুযোগ নিয়েই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই প্রোমোটার নামে-বেনামে ১৭৫০ বিঘা জমি কিনে তা বিভিন্ন সংস্থাকে বিক্রি করেন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দুই তালুকে ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক, পোশাক তৈরি, ফাউন্ড্রি, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, প্লাস্টিকের সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় লগ্নির পরিমাণ প্রায় ন’হাজার কোটি টাকা। প্রায় এক লক্ষ মানুষ সেখানে কাজ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement