দলবল নিয়ে রুটিন তল্লাশিতে বেরিয়ে আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র। সে সময়েই ধরা পড়লেন প্রায় দেড় বছর ধরে ‘ফেরার’ আরামবাগের তিনটি সমবায়ের আলু কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত হিমঘর মালিক প্রশান্ত ভট্টাচার্য।
বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ নিজের গাড়িতে প্রশান্তবাবু আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর রাস্তায় যাচ্ছিলেন। পুড়শুড়া-আরামবাগ সীমান্ত এলাকায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। প্রশান্তবাবুর গাড়িও দাঁড়ায়। তাঁর কাছে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সেটির লাইসেন্স দেখার সময়েই প্রশান্তবাবুর পরিচয় নজরে পড়ে এসডিপিওর। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। শিবপ্রসাদবাবু বলেন, “২০১২ সালের অক্টোবর মাসে এফআইআর হওয়ার পর থেকে ওই ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা চলছিল। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।” পুলিশ জানায়, সরকারি সহায়ক মূল্যে আলু কেনাকে কেন্দ্র করে আরামবাগের তিনটি কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির (বাছানরী, কাবলে এবং প্রতাপনগর) পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ২০১০ সালের জুলাই মাস নাগাদ। তা নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিআই সরব হয় এবং আন্দোলন শুরু করে। মহকুমা থেকে রাজ্য-স্তর পর্যন্ত কয়েক দফা তদন্তে ধরা পড়ে, মাস্টার রোলে নাম থাকা অনেক চাষি আদৌ আলু বিক্রি করেননি। কিছু চাষির আবার সই মেলেনি। সিআইডি তদন্তও হয়।
অবশেষে প্রায় দু’বছর পরে ২০১২ সালের ১৭ অক্টোবর রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের সহ অধিকর্তা সুদীপকুমার পাল আরামবাগ থানায় উমেশ হিমঘরের মালিক প্রশান্ত ভট্টাচার্য-সহ ১৩ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেন। তাঁদের মধ্যে সনত্কুমার পাল নামে প্রতাপনগর সমবায় সমিতির এক কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযোগের ৫ দিন পরেই। আদালতে আত্মসমর্পণ করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান প্রতাপনগরের ম্যানেজার স্বপন রায় ও কাবলের ম্যানেজার কাশীনাথ রায়। এ ছাড়া, আর এক অভিযুক্ত ভূদেবচন্দ্র ঘোষ উচ্চ আদালতে জামিন পান। প্রধান অভিযুক্ত প্রশান্ত ভট্টাচার্য-সহ বাকিরা জামিন পাননি। তাঁরা পলাতক বলে জানিয়েছিল পুলিশ।