তারকার ছোঁয়া। ছবি: দীপঙ্কর দে।
তারকা প্রার্থী বাপ্পি লাহিড়ির প্রচারের তোড়ে শুক্রবার বিকেলের পর থেকে নাকাল হলেন হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ।
বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ উত্তরপাড়া থেকে বাপ্পির রোড শো এগোয় জিটি রোড ধরে। শুরুর দিকে যান নিয়ন্ত্রণে মাথা ঘামায়নি পুলিশ। একে তো বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হুড়োহুড়ি, তার উপরে ভারত বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীকে দেখতে সাধারণ মানুষেরও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ফলে বাপ্পির কনভয় এগিয়েছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। রাস্তার দু’পাশে ভিড় ঠেলে এগোতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়েছেন রোড শোয়ের দায়িত্বে থাকা বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরাও। পরে পুলিশ এবং সিভিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার মরিয়া চেষ্টা চালালেও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ পুরোপুরি কাটেনি। যার জেরে দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়েন বহু নিত্যযাত্রী। একাধিক অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে পড়ে ভিড়ে। শ্রীরামপুর থেকে ৩ নম্বর রুটের বহু বাস সারি দিয়ে রাস্তার দু’দিকে দাঁড়িয়ে পড়ে। আরও কিছু রুটে যান চলাচল ব্যাহত হয়। ছোট গাড়িতে বহু মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে বসে ছিলেন। বাপ্পির সঙ্গীসাথী বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা উৎসাহী জনতাকে বিস্তর ধাক্কাধাক্কি করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে কোতরংয়ের স্বপন মুখোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গেল, “ভালবেসেই তো দেখতে এসেছিলাম প্রার্থীকে। এমন ঘাড়ধাক্কা খেতে হবে ভাবিনি।”
হিন্দমোটর থেকে উত্তরপাড়ায় চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন বৃদ্ধা অঞ্জলি নাথ। লাঠি নিয়ে হাঁটেন। অশক্ত শরীর। যানজটে বিরক্ত বৃদ্ধা বলেন, “এদের তো দেখছি শৃঙ্খলার বালাই নেই। জিতলে কী হবে।”
পাপিয়া মুখোপাধ্যায় অসুস্থ বাবাকে নার্সিংহোমে দেখতে বেরিয়েছিলেন। কোন্নগরে ফিরতে গিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ রিকশায় বসেই কাটাতে হল তাঁকে।
শ্রীময়ী মুখোপাধ্যায় বলেন, “তারকা প্রার্থীদের নিয়ে এই হল সমস্যা। এত হইচই হয় তাঁদের নিয়ে। কিন্তু যদি সত্যি জিতে যান, কাজের কাজ কতটুকুু হবে, কতটুকু সময় উনি এলাকার জন্য দিতে পারবেন, সে সব প্রশ্ন থেকেই যায়।”
জেলা বিজেপির সহ সভাপতি স্বপন পাল বলেন, “ওঁর মতো সর্বভারতীয় ব্যক্তিত্ব এলে এমন পরিস্থিতি হতে পারে। তবে আমরা মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”