মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরকে বাড়ি ফেরাল পুলিশ

ভিন্ রাজ্যের মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরকে উদ্ধার করে, ইন্টারনেটের সাহায্যে তার পরিবারের সন্ধান জেনে, বাড়ি ফেরাল বাগদা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২০ এপ্রিল, সন্ধ্যায় বাগদার সীমান্ত গ্রাম বাঁশঘাটায় কাঁটাতারের কাছে এক কিশোরকে ঘুরে বেড়াতে দেখে তাকে পাচারকারী বলেই সন্দেহ করে বিএসএফ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা দেখে সন্দেহ হয় বিএসএফের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৩
Share:

ঘরে ফেরার পথে বাবার সঙ্গে যোগেন্দ্র হাজরা।—নিজস্ব চিত্র।

ভিন্ রাজ্যের মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরকে উদ্ধার করে, ইন্টারনেটের সাহায্যে তার পরিবারের সন্ধান জেনে, বাড়ি ফেরাল বাগদা থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২০ এপ্রিল, সন্ধ্যায় বাগদার সীমান্ত গ্রাম বাঁশঘাটায় কাঁটাতারের কাছে এক কিশোরকে ঘুরে বেড়াতে দেখে তাকে পাচারকারী বলেই সন্দেহ করে বিএসএফ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা দেখে সন্দেহ হয় বিএসএফের। তারা তাকে নিয়ে যায় বাগদা থানায়। সেখানে পুলিশকে সে বলে তার নাম যোগেন্দ্র কুমার, বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বিজেডি গ্রামে। থানার নাম বলে জামগাঁও। ইন্টারনেটে সার্চ করে গিরিডি জেলায় জামগাঁও না, জামুয়া থানার সন্ধান পায় পুলিশ। বাগদা থানার ওসি গোপাল বিশ্বাস যোগাযোগ করেন ওই থানার স্টেশন হাউজ অফিসার অজয়কুমার সাহুর সঙ্গে। তিনি গোপালবাবুকে জানান, ওই থানার অধীনে বিজেডি নামে একটি গ্রাম রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেখান থেকে কোনও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়নি। তবে তিনি গোপালবাবুকে আশ্বাস দেন এরকম কোনও ঘটনার কথা জানতে পারলে জানাবেন। গোপালবাবুর মোবাইল নম্বরও রেখে দেন তিনি।

ইতিমধ্যে বছর ষোলোর ওই কিশোরকে বাগদা গ্রামীণ ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসা করায় পুলিশ। স্থানীয় একটি বাড়িতে ‘সেফ কাস্টডি’তে রাখা হয়। পুলিশই তখনকার মতো তার খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করে।

Advertisement

ঘটনার পরের দিন, ২১ এপ্রিল রাতে বিনোদ হাজরা নামে এক জন গোপালবাবুর মোবাইলে ফোন করে জানান, ১ এপ্রিল থেকে তাঁর ছেলে যোগেন্দ্র হাজরা নিখোঁজ। সে আড়াই বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁরা নিজেরা খোঁজাখুঁজি করছেন। তাই পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেননি। গোপালবাবুর কাছ থেকে কিশোরের বিবরণ শুনে নিশ্চিত হন, সে-ই তাঁর হারিয়ে যাওয়া ছেলে।

বুধবার সন্ধ্যায় কয়েক জনকে নিয়ে বাগদা থানায় আসেন বিনোদবাবু। ছেলেকে শনাক্ত করেন। ছেলেও বাবাকে চিনতে পেরে জড়িয়ে ধরে। ফেরার সময়ে বিনোদবাবুর হাতে হাজার দুয়েক টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বাগদা থানার পুলিশ। পেশায় খেতমজুর বিনোদবাবুর তখন চোখে জল। বললেন, “এখানকার পুলিশের এমন ভাল কাজ, কখনও ভুলতে পারব না। ওঁদের জন্যই ছেলেকে খুঁজে পেলাম।”

তবে বাগদা থানার পুলিশ অবশ্য বিষয়টিকে আলাদা করে দেখছে না। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আমরা তো আলাদা কিছু করিনি। কর্তব্য করেছি মাত্র!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন