মন্দিরবাজারে জমিজমা নিয়ে বিবাদে খুন যুবককে

ইমারতি মালপত্রের দোকান বন্ধ করে মোটর বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন এক যুবক। বাড়ির থেকে খানিক দূরে ওত পেতে ছিল দুষ্কৃতীরা। কাছে আসতেই মোটরবাইক আরোহীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। মৃত্যু হয়েছে আব্দুল হাকিম গায়েন (৩৫) নামে ওই যুবকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০২:০০
Share:

ইমারতি মালপত্রের দোকান বন্ধ করে মোটর বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন এক যুবক। বাড়ির থেকে খানিক দূরে ওত পেতে ছিল দুষ্কৃতীরা। কাছে আসতেই মোটরবাইক আরোহীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। মৃত্যু হয়েছে আব্দুল হাকিম গায়েন (৩৫) নামে ওই যুবকের। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মন্দিরবাজারের গোড়িজলা গ্রামে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুধবার দুপুরে উত্তর ঝাঁপবেড়িয়া গ্রাম থেকে হাফিজউদ্দিন দোস্থগীর নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আজ, বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হবে। এ দিন তদন্তে ঘটনাস্থলে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীন ত্রিপাঠি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ (পূর্ব) কঙ্করপ্রসাদ বারুই। পুলিশ সুপার বলেন, “জমি-সংক্রান্ত পুরনো বিবাদের জেরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। মৃতের ভাই হাফিজউদ্দিন গায়েনের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরবাজার-সংগ্রামপুর রোডে ঝাঁপবেড়িয়া মোড়ে প্রায় বছর দ’শেক ধরে ইমারতি সামগ্রীর দোকান চালান হাকিম। দোকান থেকে গোড়িজলা গ্রামের বাড়ি দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। বাড়ি থেকে মোটর বাইকেই যাতায়াত করতেন তিনি। বছর তিনেক আগে সিপিএম ছেড়ে হাকিম যোগ দেন তৃণমূলে। গ্রামের বুথ কমিটির সভাপতিও হন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি পাশের উত্তর ঝাঁপবেড়িয়া গ্রামে। শ্বশুর আজিজুল মোল্লার কিছু জমি-জায়গা আছে। গোড়িজলা গ্রামে ঢোকার মোড়ের পাশেই ওই জমির দখল করে দোকান করা নিয়ে বছর দু’য়েক আগে হাকিমের শ্বশুরের সঙ্গে প্রতিবেশীদের ঝামেলা বেধেছিল। সে সময় হাকিমের বাধায় তারা কিছু করতে পারেনি।

মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে একাই বাড়িই ফিরছিলেম হাকিম। গ্রামে ঢোকার মুখে তার বাইক থামিয়ে পিছনে বসে প্রতিবেশী মজনু মণ্ডল। মিনিট কয়েক এগোতেই রাস্তা আগলে দাঁড়ায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। তাদের মধ্যে এক জন হাকিমকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। গুলি লাগে হাকিমের পেটের ডান দিকে। ওই অবস্থায় মোটর বাইক ফেলে রেখে তিনি রাস্তার উপর দিয়ে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে ছুটতে শুরু করেন। তাঁর চিৎকারে এগিয়ে আসেন কয়েক জন। তাঁরাই রক্তাক্ত অবস্থায় হাকিমকে নিয়ে যান ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

হাকিমের বাইকে বসে থাকা মজনু পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিল। আবছা ভাবে দু’জনকে দাঁড়াতে দেখেছিছিলেন তিনি। গুলি চলতেই বাইক থেকে নেমে পালিয়ে যান তিনি। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, হাকিমবাবু শান্ত স্বভাবের যুবক। মানুষের বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।

নিহতের স্ত্রী সাজিদা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। হাকিমের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, “আমার ছেলের সঙ্গে কয়েক জনের জমি-সংক্রান্ত একটা পুরনো বিবাদ ছিল। তবে কারা খুন করল পুলিশ তদন্ত করে তাদের গ্রেফতার করুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন