যাত্রীদের জন্য মুন্সিরহাট হল্ট স্টেশনে নির্মিত শৌচাগার।—নিজস্ব চিত্র।
দু’বছর ধরে শৌচাগারে তালা। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে সমস্যা হচ্ছে মহিলাদের। এমনই অবস্থা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-আমতা শাখার মুন্সিরহাট হল্ট স্টেশনে।
এখানে একটি শৌচাগারের জন্য যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবি মেনেই যাত্রীদের সুবিধার্থে রেল দফতর ২০১২ সালের গোড়ায় তৈরি করে মহিলা ও পুরুষের উপযোগী শৌচাগারটি। কিন্তু দু’বছর কেটে গেলেও শৌচাগারটি চালু হয়নি। মুন্সিরহাট হল্ট স্টেশন থেকে নিয়মিত যাতায়াত করেন তুহিন দাস। তাঁর কথায়, “আমি হাওড়া শহরে চাকরি করি। প্রতিদিন এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু স্টেশনের শৌচাগারটি গত দু’বছর ধরে তৈরি হয়ে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। স্টেশনে পুরুষ, মহিলা যাত্রীদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ।”
এই স্টেশন থেকে বড়গাছিয়া, জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর, পেঁড়ো, ঘোড়াদহ, বালিচক, খিলা প্রভৃতি এলাকা থেকে হাজার হাজার নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে মহিলাও রয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বার বার স্টেশন কর্তৃপক্ষকে শৌচাগারটি খুলে দেওয়ার জন্য তাঁরা অনুরোধ জানালেও কোনও ফল হয়নি।
যাত্রীদের অভিযোগ, শুধু শৌচাগারের সমস্যাই নয়। স্টেশনে এসে তাঁদের আরও অনেক অসুবিধা ভোগ করতে হয় বলে তাঁরা জানান। তাঁদের অভিযোগ, টিকিট দেওয়া শুরু হয় ট্রেন আসার ঠিক আগে। টিকিট দেওয়ার সময়ে কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। ভিড়ের কারণে অনেকে টিকিট কাটতে না-পারায় ট্রেন ফেল করেন। যাত্রীদের আরও অভিযোগ, রাতে প্ল্যাটফর্মে কোনও আলো জ্বলে না। স্টেশন সংলগ্ন রাস্তাতেও আলো জ্বলে না। রাতের অন্ধকারে স্টেশনে চলে নানারকম অসামাজিক কাজ। মদ-জুয়ার পাশাপাশি অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চলে দেহব্যবসাও।
নিত্যযাত্রী সমিতির তরফে শিবনাথ কুণ্ডু বলেন, “আমাদের কাছে খবর আছে ঝাড়ুদার নিয়োগ না-করার জন্যই দু’বছর হল শৌচাগারটি চালু করা যাচ্ছে না। কারণ, শৌচাগারটি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হলে দূষণ ছড়াবে। আমরা অবিলম্বে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে শৌচাগারটি চালু করার দাবি জানিয়েছি।”
শৌচাগার চালু সহ স্টেশনের অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আমতার স্টেশন ম্যানেজার শম্ভূনাথ চক্রবর্তী বলেন, “মুন্সিরহাট হল্ট স্টেশনটি আমার অধীনে নেই। এটি বড়গাছিয়া স্টেশন মাস্টারের অধীন। তিনিই এ ব্যাপারে বলতে পারবেন।” অন্যদিকে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন বড়গাছিয়ার স্টেশন ম্যানেজার।