শূন্য পড়ে বহু পদ পরিষেবায় সমস্যা

হাওড়া পুরসভার অনেক পদ বহু বছর খালি পড়ে আছে। ফলে পরিষেবা পেতে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। সমস্যা হচ্ছে পুর-কর্মীদেরও। অভিযোগ, পূর্বতন বামবোর্ডের গড়িমসিতে শূন্য পদগুলি পূরণ হয়নি।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৮
Share:

হাওড়া পুরসভা।ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

হাওড়া পুরসভার অনেক পদ বহু বছর খালি পড়ে আছে। ফলে পরিষেবা পেতে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। সমস্যা হচ্ছে পুর-কর্মীদেরও। অভিযোগ, পূর্বতন বামবোর্ডের গড়িমসিতে শূন্য পদগুলি পূরণ হয়নি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, পুর-এলাকার যাবতীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয় মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারের হাত ধরে। রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প, জেএনএনইউআরএম-এর বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। এই পদটি বহু বছর ধরে ফাঁকা। ফলে প্রকল্পের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। বর্ষা আসার আগেই হাওড়া পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে পুরসভার নতুন তৃণমূল বোর্ড। কিন্তু মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া তা কতটা করা যাবে এ বিষয়ে ধন্দে রয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এগজিকিউটিভ পদমর্যাদার ইঞ্জিনিয়ারও প্রয়োজনের তুলনায় কম আছেন।

আট জনের প্রয়োজন হলেও রয়েছেন মাত্র পাঁচ জন।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, ন’য়ের দশক থেকেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদ খালি পড়ে রয়েছে। এক জন সহ-স্বাস্থ্য আধিকারিক এই কাজ সামলাচ্ছেন। মৃত্যুর শংসাপত্র থেকে মশা দমনের কীটনাশক স্প্রে সব কিছু দেখভালের দায়িত্ব এই পদের পালন করার কথা। পুরবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, পুরসভা কি আদৌ স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন? কদমতলার বাসিন্দা রামকমল দাস বলেন, “মেয়র নিজে চিকিৎসক। আমরা আশা করি এ বার পুরসভার এই পদটি পূরণ হবে।”

শূন্য পদের জন্য বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুর-কর্মীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। বর্তমানে পুরসভার প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ কম্পিউটারে হয়। কিন্তু নেই কোনও ‘টেকনিশিয়ান’। কোনও কারণে সার্ভারে সমস্যা হলে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই বলে জানান কর্মীরা। পাশাপাশি বাসিন্দারাও পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যান। কর্মী সমস্যার কথা স্বীকার করে পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ২০০৭-এ পুরসভা এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করে। রিপোর্ট পাঠানো হয় তৎকালীন বাম সরকারের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। সেখান থেকে ২০০৮-এ একটি রিপোর্ট আসে। প্রয়োজনীয় কর্মীদের একটি তালিকা তৈরির কথা বলা হয়। কিন্তু তার পরে আর কাজ এগয়নি বলে পুরসভা সূত্রে খবর। নিয়ম অনুযায়ী পুরসভা ‘ফিডব্যাক’ পাঠানোর পরে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শূন্য পদে নিয়োগ হয়। কিন্তু ২০০৮-এর পরে কেন উদ্যোগী হল না পুরসভা?

অভিযোগ অস্বীকার করে পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের মমতা জায়সবাল বলেন, “এ বিষয়ে কাজ চলছিল। কিন্তু নানা নিয়মকানুন মানতে গিয়ে কাজটি করা হয়ে ওঠেনি।” যদিও সমস্যার কথা স্বীকার করে বতর্মান মেয়র তৃণমূলের রথীন চক্রবর্তী বলেন, “কর্মী সংখ্যা কমের বিষয়টি জানি। বাসিন্দাদের পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কম কর্মী নিয়েও পরিষেবা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কর্মী সমস্যার সমাধানের বিষয়ে কথা হয়েছে। দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন