স্ত্রীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার স্বামী

অতিরিক্ত পণের দাবিতে অত্যাচার চলত স্ত্রীর উপরে। অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট স্বামী পাওনাদারদের টাকা ফেরত দিতে না পারাকে কেন্দ্র করেও সংসারে অশান্তি ছিল। সে সবের জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

অতিরিক্ত পণের দাবিতে অত্যাচার চলত স্ত্রীর উপরে। অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট স্বামী পাওনাদারদের টাকা ফেরত দিতে না পারাকে কেন্দ্র করেও সংসারে অশান্তি ছিল। সে সবের জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।

Advertisement

বুধবার সকালে স্বরূপনগরের ধোকড়া গ্রামে বাড়ি টগরি মণ্ডল (২২) নামে ওই বধূর দেহ মেলে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। স্বরূপনগর থানার ওসি প্রসেন মিত্র বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক করে কিছু বলা যাবে না।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১০ সালের অগস্ট মাসে স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী তারালি গ্রামের বারিক বিশ্বাসের মেয়ে টগরির সঙ্গে বিয়ে হয় ধোকড়া গ্রামের কওসার আলি মণ্ডলের ছেলে মনিরুলের। তাদের দুই ছেলে। বারিকবাবুর দাবি, বিয়েতে জামাইয়ের চাহিদা মতো লক্ষাধিক টাকা নগদ-সহ সোনার গয়নাগাটি ও অন্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও আরও টাকার দাবিতে মেয়ের উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালাত জামাই ও তার বাড়ির লোকজন। বছর তিনেক আগে জামাই ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল। দিতে না পারায় অত্যাচার আরও বাড়ে।

Advertisement

মনিরুল অর্থলগ্নি সংস্থায় এজেন্টের কাজ করত। সংস্থাগুলি সম্প্রতি বন্ধ হওয়ার পরে পাওনাদারদের চাপ বেড়েছিল। বারিকবাবু বলেন, “টাকা ফেরত না পেয়ে পাওনাদারেরা প্রায়ই বাড়িতে এসে হামলা চালাত। তা নিয়েও মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বচসা লাগত। মঙ্গলবার রাতে মনিরুল খেতে বসেছিল। সে সময়ে কয়েক জন তার কাছে টাকা চাইতে আসে। তারা চলে যাওয়ার পরে স্বামী-স্ত্রীর গণ্ডগোল বাধে। অভিযোগ, মারধরের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন টগরি। বুধবার সকালে তাঁর দেহ দেখা যায়। পরে অভিযোগ পেয়ে মনিরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। টগরির শ্বশুর-শাশুড়ি-দেওর সহ অভিযুক্ত ৬ জন পলাতক।

বারিকবাবু বলেন, ‘‘অর্থলগ্নি সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে দেনা মেটাতে জামাই গ্রিলের দোকানে কাজ নেয়। আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েও পাওনাদারদের দিত। ইদানীং পাওনাদারদের টাকা দিতে না পেরে স্ত্রীকে মারধর করত। সে কারণেই মারা গিয়েছে আমার মেয়ে। তারপরে ওরা মেয়ের দেহ গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়।” মনিরুল পুলিশকে বলে, “পাওনাদারেরা বাড়িতে এসে হামলা করত। তা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বচসাও হয়েছে। কিন্তু ওকে আমরা খুন করিনি।” ওই যুবকের দাবি, “সামান্য বিষয় নিয়ে উত্তেজিত হয়ে প্রায়ই বাপের বাড়িতে চলে যেত স্ত্রী। কয়েক দিন আগে বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার পরে ফের বাড়িতে পাওনাদারদের দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ঝগড়াঝাটির পরে আমি বাড়ি থেকে চলে গেলে স্ত্রী ঘরে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন