প্রীতি দুবে
হাওড়ায় সোমবার দু’টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দু’জনের। প্রথমটি ঘটে বালিতে। গঙ্গায় স্নান করতে নেমে মৃত্যু হয় জামশেদপুরের বাসিন্দা প্রতীকরাজ সিংহের (১৭)। এ দিনই শিবপুরের বিচালিঘাটে একটি অরক্ষিত কুয়োয় পড়ে মৃত্যু হয় প্রীতি দুবে নামে সাত বছরের একটি মেয়ের। তাকে উদ্ধারে নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক যুবক। তিনি হাসপাতালে ভর্তি।
পুলিশ জানায়, দিদির বিয়ে উপলক্ষে শনিবার সপরিবার বালিতে আসে প্রতীক। সোমবার মেসো ভরত সিংহ ও তাঁর ছেলের সঙ্গে গঙ্গায় নামে সে। ভরতবাবু জানান, ওঠার সময়ে সিঁড়িতে পিছলে যায় প্রতীক। সেখানে জলের উচ্চতা ছিল তার বুকের উপরে। সাঁতার না জানায় সে উঠতে পারেনি। ভরতবাবু তাকে উদ্ধার করতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু জোয়ারে দেহটি ভেসে যায়। পুলিশ এসে ডুবুরি নামায়। পরে ঘাটের পাশে বন্ধ ডকের পাথরের খাঁজে দেহ মেলে।
এ দিনই শিবপুরে বাড়ির পাশের অরক্ষিত কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে পড়ে যায় সাত বছরের প্রীতি। পুলিশ জানায়, তার বাবা ও মা বাড়ি ছিলেন না। প্রীতি জল তুলতে গিয়ে পা পিছলে ৩৫ ফুট কুয়োটিতে পড়ে যায়। তাকে উদ্ধারে এক প্রতিবেশী মহেশ সাউ কুয়োয় নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকার এক বাসিন্দা কানাইয়া সিংহের অভিযোগ, ১০০ ডায়ালে সাড়া মেলেনি। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, পুলিশ এসেও পরিস্থিতি দেখে ফিরে যায়। ততক্ষণে পেরিয়েছে এক ঘণ্টা। এর মধ্যে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। তাদের কাছে কুয়ো থেকে উদ্ধারের সরঞ্জাম ছিল না বলে অভিযোগ। আসে ইমার্জেন্সি ট্রাফিক ভ্যান, হাওড়া সিটি পুলিশের সিভিল ডিফেন্স বাহিনীও।
প্রথমে দড়ির সাহায্যে তোলা হয় মহেশকে। দমকল সূত্রে খবর, কুয়োটি বিষাক্ত গ্যাসে ভর্তি থাকায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নামে দমকলের এক কর্মী গ্যাস মাস্ক ও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কুয়োয় নেমে প্রীতির দেহ উদ্ধার করেন। প্রশ্ন উঠেছে, কুয়োয় পড়ে যাওয়ার খবর পেয়েও দমকল কেন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়া এল? দমকলের স্টেশন অফিসার বিশ্বজিৎ বসাক বলেন, “নিয়ম মতো প্রথমে জল ভর্তি গাড়ি পাঠাই। পরে ইমার্জেন্সি ট্রাফিক ভ্যান পাঠানো হয়। আমরা মনে করি অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি।” কিন্তু ১০০ ডায়ালই বা কেন নীরব ছিল? হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”
এ দিনই খিদিরপুরের পানবাজারে পা পিছলে গঙ্গায় পড়ে নিখোঁজ হন কালী সিংহ নামে এক ব্যক্তি। তিনি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের কর্মী।