হারানো মেয়ের সন্ধান দিল গালের তিল

গালে তিল দেখে বাবা-মা চিনতে পারলেন মেয়েকে। বাদুড়িয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রচেষ্টায় এ ভাবেই দীর্ঘ পনেরো বছর পরে বাবা-মাকে ফিরে পেলেন ওই তরুণী। মঙ্গলবার দুপুরে সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানে পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতে ওই তরুণীকে তুলে দেওয়া হয় তার বাবা-মায়ের হাতে। মেয়েকে কাছে পেয়ে তখন বাবা-মায়ের চোখে জল। চোখ মুছতে থাকে মেয়েটিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

গালে তিল দেখে বাবা-মা চিনতে পারলেন মেয়েকে। বাদুড়িয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রচেষ্টায় এ ভাবেই দীর্ঘ পনেরো বছর পরে বাবা-মাকে ফিরে পেলেন ওই তরুণী।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানে পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতে ওই তরুণীকে তুলে দেওয়া হয় তার বাবা-মায়ের হাতে। মেয়েকে কাছে পেয়ে তখন বাবা-মায়ের চোখে জল। চোখ মুছতে থাকে মেয়েটিও। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে মেয়েটির বয়স ছিল ছ’বছর। প্রতিবেশী এক মহিলার কথায় রাজি হয়ে মেয়েকে দিল্লিতে ভাল বেতনের কাজের সন্ধানে পাঠিয়ে দেন ওই দম্পতি। প্রথম প্রথম প্রতি মাসে কয়েকশো করে টাকা আসতে শুরু করে। বাবা-মা ভাবেন, মেয়ে ভালই আছে। কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই ওই প্রতিবেশী জমি বিক্রি করে গ্রাম ছাড়ে। এতেই বিপদ আঁচ করেন মেয়েটির বাবা-মা। পুলিশকে জানান তাঁরা। কিন্তু তত দিনে মোটা টাকার বিনিময়ে যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়ে গিয়েছে মেয়েটি। অনেক চেষ্টা করেও বাবা-মায়ের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করতে পারেনি সে। এর মধ্যে কেটে গেছে বেশ কয়েকটি বছর। তত দিনে তার কোথায় বাড়ি, বাবা-মায়ের পরিচয় সবই প্রায় ভুলতে বসেছে সে। ওই যৌনপল্লিতে তল্লাশি চালানোর সময়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। রাখা হয় হোমে। সেখান থেকে পালায় মেয়েটি। পরে ফের পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তার ঠিকানা হয় হোমেই।

দিল্লির ওই হোম থেকে মেয়েটিকে পাঠানো হয় কলকাতার একটি হোমে। সেখান থেকে বাদুড়িয়ায়। এর মধ্যে কেটে যায় আরও কয়েকটি বছর। একুশ বছরের মেয়েটি এ বার ঠিক করে বাবা-মাকে খুঁজে বের করবে সে। সব শুনে হোম কর্তৃপক্ষও তার ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসেন। অনেক খোঁজখবর করে সন্ধান মেলে তার বাবা-মায়ের। মেয়েকে দেখে অবশ্য প্রথমে চিনতে পারেননি তাঁরা। শেষে মেয়ের গালে থাকা একটা তিলই সমস্যার নিরসন করে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে আমিরুল ইসলাম, মাহাবুল বৈদ্যরা বলেন, ‘‘আগেই আমরা মেয়েটির বাবা-মায়ের খোঁজ পেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা কেউ কাউকে চিনতে পারেনি। শেষে গালের তিল দেখে সব ঠিকঠাক হয়।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন