ফণীর চোটে অসমান সৈকত, সতর্কতায় বাড়তি নজরদারি

ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে দিঘার সৈকতে তৈরি হয়েছে একাধিক ছোট-বড় গর্ত। তার কোনওটা গোল, কোনওটা লম্বা, আবার কোনওটা মানচিত্রের আকারের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০১:৪৯
Share:

দিঘার সমুদ্র সৈকতে ফণীর দাপটে এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে ডোবার মতো অংশ।

ফণী-র স্মৃতি ক্রমশ ফিকে হচ্ছে। তবে তার ক্ষয়-চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে দিঘার সৈকতে।

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে দিঘার সৈকতে তৈরি হয়েছে একাধিক ছোট-বড় গর্ত। তার কোনওটা গোল, কোনওটা লম্বা, আবার কোনওটা মানচিত্রের আকারের। জল জমে তা ডোবার মতো দেখাচ্ছে। ওল্ড ও নিউ দিঘার সৈকতের বেশ কিছু অংশ বসে যাওয়াতেই এমন অবস্থা। যত দিন যাচ্ছে ওই সব গর্ত আরও গভীর হচ্ছে। ভাটার সময় সেগুলিতে জল জমে থাকে। ফলে, তা দেখে পর্যটকরা বুঝতে পারেন এবং সেই গর্ত এড়িয়ে সৈকতে ঘুরে বেড়ানো সহজ। কিন্তু বিপত্তি ঘটছে জোয়ারের সময়। কারণ, তখন সৈকতের একটা বড় অংশ জলের তলায় চলে যাওয়ায় সমুদ্র স্নানে নেমে পর্যটকেরা আর বুঝতে পারছেন না কোথায় রয়েছে ওই নিচু অংশ। অনেকে হোঁচট খেয়ে পড়েও যাচ্ছেন। অল্প জোয়ারে স্নান করতে নেমে শিশু, মহিলা ও বয়স্করাই বেশি বিপত্তিতে পড়ছেন। কলকাতার যাদবপুরের বাসিন্দা পিনাকী দে বলেন, “দিঘায় এসে ছোট থেকে বড় সকলেই সমুদ্রে নামতে চায়। কিন্তু সৈকতে যে ভাবে জায়গায় জায়গায় উঁচু-নিচু অংশ তৈরি হয়েছে তা ভাটার সময় বোঝা গেলেও জোয়ারের সময় বোঝা যাচ্ছে না। এতে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’

এই অবস্থায় সৈকতে টহলদারি চালানো নুলিয়া ও পুলিশের পক্ষে পর্যটকদের নিরাপত্তা বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমস্যা সমাধানে ওই নিচু জায়গায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কখনও বাঁশি বাজিয়ে, কখনও মৌখিকভাবে পর্যটকদের ওই নিচু অংশ এড়িয়ে চলতে সতর্ক করা হচ্ছে। নিউ দিঘার সৈকতে নজরদারিতে থাকা এক নুলিয়া বলেন, “কোনও পর্যটক সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছেন কিনা আমরা তা নজর রাখি। আর এখন এই ডোবাগুলোর দিকে অতিরিক্ত নজর দিতে হচ্ছে। বাঁশি বাজিয়ে যতটা পারছি পর্যটকদের সতর্ক করছি।’’

Advertisement

ফণী আসার আগে দিঘার সৈকত এমন অসমান ছিল না। ফণীর জেরে সব ওলটপালট হয়েছে। অসমান সৈকতের সমস্যা ওল্ড দিঘার তুলনায় নিউ দিঘায় বেশি। বিশেষ করে নিউ দিঘার ক্ষণিকা ঘাট, পুলিশ হলিডে হোম ঘাট, রেলস্টেশন ঘাট এবং হাসপাতাল ঘাট সংলগ্ন এলাকায় উঁচু-নিচু সৈকতে ছোট ছোট ডোবা নজরে পড়ছে। পাশাপাশি ওল্ড দিঘায় কংক্রিটের অংশ থেকে সৈকতের নামার জায়গায় স্বাভাবিক যে ব্যবধান ছিল তাও বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

কেন এই পরিস্থিতি হল? এর থেকে রেহাই পাওয়ার উপায়ই বা কী?

সমুদ্রে ‘ওয়েব রাইডার বয়’ নিয়ে কাজ করা ‘ইনকোয়েস’-এর সদর দফতর হায়দরাবাদে। ওই কেন্দ্রের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার বিষয়ে সমন্বয় রাখেন সমুদ্র ও আবহাওয়াবিদ মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন , “ফণী অত্যন্ত শক্তিশালী ঝড়। সেই ঝড়ের দাপটে ও বৃষ্টির জেরে সমুদ্র সৈকতে এমন উঁচু-নিচু অংশ তৈরি হতেই পারে। এর থেকে রেহাই পেতে গেলে ওই অংশগুলিতে নতুন করে বালি ফেলতে হবে।’’ দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ-এর প্রশাসক সুজন দত্তের আশ্বাস, “পর্যটকদের স্বার্থে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন