দিলীপ ঘোষ।
মৃত তিন দলীয় কর্মীর বাড়ি ঘুরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘তিনটি গ্রামে গিয়ে তৃণমূলের একটি লোকও দেখতে পাইনি। এটাই প্রকৃত বিরোধীশূন্য।’’ পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়ায় বিজেপি ভাল ফল করার পর তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তিনি পুরুলিয়া যাবেন এবং ওই জেলাকে বিরোধীশূন্য করবেন। তার পরেই পুরুলিয়ার বলরামপুরে ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলাল কুমার নামে দুই বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই প্রেক্ষিতে অভিষেক-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি। দিলীপবাবু সোমবার ত্রিলোচন, দুলাল এবং পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিহত জগন্নাথ টুডুর বাড়ি যান এবং বলরামপুরে দলীয় কার্যালয়ের লাগোয়া অবস্থান মঞ্চের কাছে সরাই ময়দানে জনসভা করেন। সেখানেই তিনি দাবি করেন, তিনটি গ্রামে তিনি এক জনও তৃণমূলের লোক দেখতে পাননি।
অভিষেককে কটাক্ষ করে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘খোকাবাবু বলেছেন, লোকসভায় ৪২টা আসন জিতবেন। জঙ্গলমহলে যা ফলাফল, তাতে চারটি আসন বাদ দিয়ে হিসেব করবেন।’’ পুরুলিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো এ বার ভোটে হেরে গিয়েছেন। তাঁর সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘খবরের কাগজে দেখলাম, এখানকার এক নেতা জমানো টাকা দিয়ে পিস্তল কিনেছেন। হঠাৎ পিস্তল কেন? বুঝেছেন, সময় ভাল নয়। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না!’’ পুরুলিয়া-কাণ্ডের প্রতিবাদে ১৮-২৫ জুন পর্যন্ত সব জেলায় জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ অকারণে কোনও বিজেপি কর্মীকে হয়রান করলে পুলিশের গাড়ি আটকে রাখুন। বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও আটকে রাখুন। মা বোনেরা বঁটি নিয়ে ঘিরে রাখুন। দরকারে গাছে বাঁধুন।’’
বলরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো অবশ্য বিজেপি-র অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দেশের মধ্যে নজির তৈরি করেছেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষেরা জঙ্গলমহল ঘুরে আবার অশান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উস্কানি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। পদ্ধতি মেনেই মৃতদের ময়না-তদন্ত করে তদন্ত হচ্ছে। আমরাও নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছি। কিন্তু উস্কানি দিচ্ছেন ওঁরা। উন্নয়নের পরিবেশ নষ্ট করাই ওঁদের লক্ষ্য।’’