দায় এড়াচ্ছে এবিভিপি, ঠিক কাজ করেছে, মত দিলীপের

ওই ছবি পোস্ট করা হয়েছে সুরঞ্জনেরই ফেসবুক পেজে। তিনি যাদবপুরের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র। তাঁর হাতেই তৈরি যাদবপুরের এবিভিপি-র ইউনিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৫
Share:

দিলীপ ঘোষ।

এক যুবক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের ঘরের দেওয়ালে লিখে দিচ্ছেন ‘এবিভিপি’। পাশে দাঁড়িয়ে এক তরুণী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিতে উপস্থিত ওই যুবকের নাম সুরঞ্জন সরকার। আর একটি ছবিতে পাশে দাঁড়ানো ওই তরুণীকেই দেওয়ালে ‘এবিভিপি’ লিখতে দেখা যাচ্ছে। তাঁর পরিচয় শুক্রবারও জানা যায়নি।

Advertisement

ওই ছবি পোস্ট করা হয়েছে সুরঞ্জনেরই ফেসবুক পেজে। তিনি যাদবপুরের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র। তাঁর হাতেই তৈরি যাদবপুরের এবিভিপি-র ইউনিট। তাঁর ফেসবুক পেজে এক জনের মন্তব্য, ‘আজ অনেক পুরনো ও বিগত দিনের জ্বালা কিছুটা হলেও ঠান্ডা হয়েছে...ধন্যবাদ সুরঞ্জন সরকার দাদা’।

যাদবপুরের বামপন্থী পড়ুয়াদের অভিযোগ, এবিভিপি এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেট দিয়ে বাইরে থেকে ঢুকে তাণ্ডব করেন। টায়ার জ্বালিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। বাঁশ, লাঠি হাতে কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর করা হয়। চে গেভারা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কার্ল মার্ক্সের ছবি নষ্ট করা হয়। ওই ছাত্র সংসদের ঘরের দেওয়ালে লিখে দেওয়া হয় এবিভিপি। সুরঞ্জনের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ছবি থেকে কার্যত বামপন্থীদের ওই অভিযোগের সমর্থন মিলছে।

Advertisement

এবিভিপি নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর করেননি। তাঁদের কেউ কেউ ছিলেন কে পি বসু মেমোরিয়াল হলে, আর বাকিরা ছিলেন চার নম্বর গেটের বাইরে। গেট বন্ধ ছিল। সুতরাং, তাঁদের পক্ষে ওই কাণ্ড করা সম্ভবই ছিল না। যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সুরঞ্জন-সহ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি-র সদস্যরা এ দিন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান করেন। সেখানে তাঁরা দাবি করেন, বামপন্থী পড়ুয়ারাই তাণ্ডব চালিয়ে তাঁদের নামে দোষ চাপাচ্ছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, বৃহস্পতিবার যাদবপুরে বামেদের আক্রমণে আহত হয়েছেন কলকাতা মহানগরের সম্পাদক মৃন্ময় দাস। এবিভিপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আশিস চৌহান বলেন, ‘‘হাইকোর্টের এক জন বিচারপতিকে দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত হোক। তা হলেই সত্য জানা যাবে। তবে বাম ছাত্র সংগঠনগুলির আচরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাহানি হয়েছে।’’ সোমবার গোলপার্ক থেকে ‘যাদবপুর চলো’র ডাক দিয়েছে আরএসএসের এই ছাত্র সংগঠন।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য এবিভিপি-র ভাঙচুর লুকোনোর কোনও চেষ্টাই করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওদের বিরুদ্ধে ওদের অস্ত্রই প্রয়োগ করা হয়েছে। যে ছাত্র সংসদের ঘর দেশদ্রোহীদের জন্ম দেয়, তা ভেঙে তালা লাগিয়ে দেওয়া উচিত। এবিভিপির কর্মীরা যে কাজ করেছে, তাতে আমি কোনও অন্যায় দেখছি না।’’

পাশাপাশি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদও যাদবপুরের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের বীরত্বের প্রচারে নেমে পড়েছে। অভিজিৎ মজুমদার নামে এক জন টুইট করেছেন, ‘কলকাতায় এটা অভাবনীয়! বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরুণীদের ইউনিট দুর্গা বাহিনী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাল্টা হামলা চালিয়েছে, এসএফআই ইউনিয়ন রুম তছনছ করেছে’। ওই টুইটের নীচে এক জন মন্তব্য করেছেন, এটাই নারীর ক্ষমতায়ন! বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ওই টুইট গণ শেয়ার করার আহ্বান জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন