প্রভাবশালীদের ফোন রেকর্ডে গরমিল: সিবিআই 

সুদীপ্ত ও দেবযানীর পাঁচটি নম্বরে কোন কোন প্রভাবশালী কথা বলেছিলেন, তা জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তা মেলেনি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৫
Share:

সুদীপ্ত সেন। —ফাইল চিত্র।

সারদা মামলায় অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যের ‘প্রভাবশালীদের’ নিয়মিত টেলিফোনে কথাবার্তা হত। তার কল ডাটা রেকর্ডস (সিডিআর) রাজীব কুমারের নেতৃত্বে নষ্ট করা হয়েছিল কি না, তা সিবিআইয়ের অধিকর্তাকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। গত ১৫ মার্চ সিবিআই অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্ল সেই হলফনামা জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন, সারদা মামলার তদন্তে রাজ্য যে সিট গঠন করেছিল, তার দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখতেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সিবিআই পুলিশের কাছে ২০১২ এবং ২০১৩-তে সুদীপ্ত ও দেবযানীর পাঁচটি নম্বরে কোন কোন প্রভাবশালী কথা বলেছিলেন, তা জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তা মেলেনি।

Advertisement

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সারদা-তদন্তে রাজীব কুমারের ভূমিকা নিয়ে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়েছিল সিবিআই। তার ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে সুদীপ্ত-দেবযানীর সিডিআর রাজীব কুমারের নেতৃত্বে অদলবদল করে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই ফের হলফনামা চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।

সিবিআই অধিকর্তা তাঁর হলফনামায় বলেছেন, আংশিক সিডিআর দিতে রাজ্য পুলিশ ১৪ মাস ঘুরিয়েছিল। তার পরেও যা মিলেছিল, তা সিবিআইয়ের ‘টেকনিক্যাল অ্যান্ড ফরেনসিক সায়েন্স ইউনিট’ পরীক্ষা করে দেখেছিল। সেই সিডিআর-এও ‘ফ্রিকোয়েন্সি এবং‌ টেলিফোন কলের সংখ্যায় নানা গরমিল ধরা পড়েছে। এর পরেই ৩৭ পাতার হলফনামার ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে সিবিআই অধিকর্তা জানান, উপরের ঘটনাক্রম এবং প্রাপ্ত নথি দেখে তদন্তকারী অফিসারদের মনে হয়েছে, তাঁদের সিদ্ধান্ত যুক্তিগ্রাহ্য।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সিবিআই নতুন হলফনামাটি তিন ভাগে ভাগ করেছে। প্রথমত, সিট গঠন সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিটি হলফনামায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে প্রমাণ হয়, সিট-এর যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপের জন্য দায়ী ছিলেন রাজীবই। দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে, ২০১৭-র ৪ এপ্রিল প্রভাবশালীদের সঙ্গে সুদীপ্ত-দেবযানীর কথাবার্তার রেকর্ড চায় সিবিআই। বিধাননগর কমিশনারেটে চার বার ‘রিমাইন্ডার’ পাঠানো হয়। ৯ মাস পর পুলিশ একটি ফাঁকা সিডি পাঠায়। এর পর ২০১৮-এর ২৬ জুন প্রথম কিছু সিডিআর পাঠায় বিধাননগর পুলিশ। পরের ধাপে সিবিআই জানিয়েছে, ফরেন্সিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সিডিআর চাওয়া হলেও আসলে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু দিনের কল রেকর্ড পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দেওয়া কল রেকর্ডের সঙ্গে সিবিআইয়ের রেকর্ডে কেন এত ফারাক হল, তা তদন্ত করা হচ্ছে।

১৫ পাতার মূল হলফনামায় সিবিআই মাত্র দু’বার রাজীব কুমারের নাম উল্লেখ করেছে। কেন? এক সিবিআই কর্তা জানান, অতিরিক্তি হলফনামার একটি অনুচ্ছেদের উপরেই এটি পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সারদা তদন্তে রাজীবের ভূমিকা কী ছিল, তা সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বার বার নাম লেখার কোনও প্রয়োজন হয়নি।

যদিও নবান্নের কর্তাদের বক্তব্য, ১৮ফেব্রুয়ারির অতিরিক্ত হলফনামায় যে আক্রমণাত্মক সিবিআই-কে দেখা গিয়েছিল, এ বার তা নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন