উত্তর ২৪ পরগনায় ভাটপাড়ায় সিপিএমের কাউকে প্রার্থী না করে আসনটি আরজেডি-কে ছাড়ায় স্থানীয় সিপিএম কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে ছুটেছিলেন আলিমুদ্দিনে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ধমক খেয়ে তাঁরা ফেরেন। তবে প্রার্থী নিয়ে বাম শিবিরে ক্ষোভ মাথাচ়াড়া দিচ্ছে অন্যত্রও। হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট উত্তরের সঙ্গে কলকাতার শ্যামপুকুরেও প্রার্থীকে নিয়ে আপত্তি বামফ্রন্টেরই একাংশের।
হিঙ্গলগঞ্জে সিপিআই প্রার্থী, বর্তমান বিধায়ক আনন্দ মণ্ডলকে পরিবর্তনের দাবি করছেন সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব। দাবি, ১৯৭৭ সাল থেকে টানা সিপিএমের জেতা এই কেন্দ্র গত বার ‘বিশেষ কারণে’ সিপিআইকে ছাড়া হয়। আনন্দবাবু জেতেনও। তবে এ বার সিপিএমের স্থানীয় কোনও নেতাকে প্রার্থী করতে হবে। প্রাথমিক ভাবে, সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব হিঙ্গলগঞ্জের নেতাদের দাবি মানেননি। ফলে, জোনাল কমিটির সদস্য-সহ হিঙ্গলগঞ্জ (পশ্চিম) লোকাল কমিটির সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। যদিও জেলা নেতৃত্ব এখনও তা গ্রহণ করেননি।
এই নিয়ে সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বিমান বসুর সঙ্গে কথাও বলেছেন। বুধবার আনন্দবাবু প্রচারে গেলে ক্ষুব্ধ সিপিএম কর্মীরা তাঁর পতাকাও ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ। সিপিএমের হিঙ্গলগঞ্জ জোনাল কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’’ সিপিআই নেতা স্বপনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বিমানবাবুর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। যা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।’’ পরিস্থিতি এমন জায়গায় যে, সিপিএম কর্মীরা এক প্রাক্তন সরকারি আমলাকে নির্দল প্রার্থী করার কথাও ভাবছেন।
শ্যামপুকুরে কেশব ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণায় তুলকালাম বেধেছে ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরে। দলের কলকাতা জেলা নেতৃত্ব এমন প্রার্থীকে মানতে নারাজ। ফেসবুকে কেশববাবু যে আরএসএসের সমর্থনে হিন্দুত্ববাদী অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তার প্রিন্টআউট নিয়ে কলকাতার নেতারা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন তুলছেন, ফব-র রাজ্য সম্পাদক মৃত্যুর পরে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা রেখে গিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। তার ১২ দিনের মধ্যে এমন প্রার্থী ছা়ড়া কাউকে পাওয়া গেল না? তিন বছর আগে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যকে খুনে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে বসিরহাট (উত্তর) কেন্দ্রে প্রার্থী করা নিয়ে সিপিএমের অভ্যন্তরীন বিরোধও মেটেনি। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে, রফিকুলকে সিপিএম নয়, নির্দল প্রার্থী করা হবে। বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে এ দিন বিমানবাবু বলেন, ‘‘রফিকুল নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়বেন।’’ কিন্তু জেতার পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন না, তা নিশ্চিত? বিমানবাবুর জবাব, ‘‘জিতলেও উনি তৃণমূলে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন।’’