Suvendu Adhikari

Saradha Scam: কাঁথির ‘সারদা ফাইল’ উধাও! জেলে সুদীপ্তকে জেরা পুলিশের, নিশানায় শুভেন্দু-সৌমেন্দু!

সুদীপ্ত সেন অভিযোগ করেছেন, কাঁথিতে সারদার আবাসন প্রকল্পের জন্য তাঁর থেকে কয়েক কোটি টাকা নেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সূত্রে সুদীপ্তকে জেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২২ ১৮:০৩
Share:

কাঁথি পুরসভায় সারদা কাণ্ডের ফাইল লোপাটের ঘটনায় সুদীপ্ত সেনকে জেলা কাঁথি পুলিশের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

সারদা-কাণ্ডে সুদীপ্ত সেনকে প্রেসিডেন্সি জেলে জেরা করল কাঁথি থানার পুলিশ। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলে আসে কাঁথি থানার পুলিশের একটি দল। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁরা জেরা করেন সারদা কর্তাকে। সূত্রের খবর, সারদা কর্তার সম্প্রতি করা কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তাঁরা প্রেসিডেন্সি জেলে আসেন। কাঁথি থানার আইসি-সহ পাঁচ সদস্যের একটি পুলিশের দল সারদা কর্তাকে জেরা করে কাঁথি পুরসভায় তাঁর বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক বিষয়ে জানতে চান।

Advertisement

জিজ্ঞাসাবাদের পর কাঁথি থানার আইসি বলেন, ‘‘সুদীপ্ত সেন আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। আমরা ওঁর থেকে অনেক কিছু জানতেও পেরেছি। যে সময়ের ফাইল লোপাটের কথা বলা হয়েছে, সে সময় বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত যে রকম এগোবে, আপনাদের জানাতে থাকব।’’

সম্প্রতি কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান অভিযোগ তোলেন, সারদা সংক্রান্ত ফাইল কাঁথি পুরসভা থেকে ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, সারদা কর্তা যে অভিযোগ করেছেন, সেই ঘটনার সূত্র পেতেই রবিবারের জেরা বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে সারদা কর্তাকে জেরা করে কাঁথি থানার পুলিশ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন সুদীপ্ত সেনের একটি ভিডিও প্রকাশ করে তৃণমূল। এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। সেখানে সুদীপ্তকে বলতে শোনা যায়, শুভেন্দু তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতেন এবং শুভেন্দুকে তিনি টাকা দিয়েছিলেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক জন সুদীপ্তকে জিজ্ঞাসা করছেন, কাঁথিতে কার কথায় গিয়েছিলেন? তখন সুদীপ্ত শুভেন্দুর নাম করেন। প্রশ্ন করা হয়, দ্বিতীয় চিঠির বয়ানে কার নাম ছিল? ফের শুভেন্দুর নাম করেন সুদীপ্ত। তারপরে প্রশ্ন করা হয়, কত টাকা নিয়েছিল, কী বলে টাকা নিত? তখন সুদীপ্ত বলেন, ‘‘একটা জমির ব্যাপার ছিল। আরেকটা স্যাংশনড প্ল্যানের ব্যাপার ছিল। সেই প্ল্যান চাইতে গেলে ব্ল্যাকমেল করা হত।’’

ওই ঘটনায় পর থেকেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সিবিআই পদক্ষেপ চেয়ে পথে নেমেছিল তৃণমূল। এর পর ৩০ শে জুন সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের একটি মামলার শুনানির জন্য সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে নিয়ে আসা হয়। আদালতে ঢোকার সময় ফের বিস্ফোরক দাবি করেন সুদীপ্ত। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে কাঁথিতে। কাঁথিতে একটা হাইরাইজ বিল্ডিং করার জন্য উনি ৫০ লক্ষ টাকা কাঁথি পুরসভাতে জমা দিতে বলেন। এর পর আমরা ওই বিল্ডিংয়ের কাজকর্ম করি। আমরা ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে লেবার হাট কমপ্লিট করেছিলাম। এর পরও উনি আমাদের প্ল্যান দেননি।’’ সেই সংক্রান্ত ফাইল লোপাট হয়ে গিয়েছে বলেই অভিযোগ করা হয়েছে কাঁথি পুরসভার তরফে।

যে সময়ে ফাইল লোপাট করার কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। বর্তমান পুরবোর্ড তৃণমূল পরিচালিত। শুভেন্দু ও সৌমেন্দু বিরুদ্ধেই মূলত অভিযোগ করেছে তৃণমূল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সুদীপ্তকে জেরা করা হয়েছে।

কাঁথি পুরসভা থেকে ফাইল লোপাটের ঘটনায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আগেই অভিযুক্ত করেছেন অধিকারী পরিবারকে। জবাবে বিজেপির তরফে দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক তথা ১০ কাউন্সিলর অরূপ কুমার দাস বলেন, ‘‘ফাইলগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রাখা হয়। সৌমেন্দুবাবু যখন পুরসভা ছেড়ে এসেছিলেন, তখন কোনও অভিযোগ ওঠেনি। আর এতদিন পর কেন ফাইল লোপাটের গল্প সাজানো হচ্ছে কেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন শুভেন্দুবাবু আর তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা সাজাতে হবে। হঠাৎ করে সুদীপ্ত সেন জেগে উঠলেন কেন? দেড় বছরের বেশি সময় হল সৌমেন্দুবাবু পুরসভা ছেড়ে এসেছেন। এখন পুলিশি তৎপরতা দেখে সত্যিই সন্দেহ জাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন