প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার পরে রিপোর্টের নীচে চিকিৎসকের নাম লেখা রবার স্ট্যাম্প আর ব্যবহার করা যাবে না। সেখানে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে নিজের হাতে সই করতে হবে। তা না-হলে সেই রিপোর্ট বৈধ বলে বিবেচিত হবে না। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের এক নির্দেশিকায় এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ আসছে, ল্যাবরেটরিতে কোনও চিকিৎসক নেই। টেকনোলজিস্টেরা পরীক্ষা করছেন এবং রিপোর্টের নীচে কোনও এক জন চিকিৎসকের নাম লেখা রবার স্ট্যাম্প দিয়ে ল্যাবরেটরি-কর্তৃপক্ষ দায় সারছেন। এটা আর চলতে দেওয়া হবে না।’’
অজয়বাবু জানান, বিভিন্ন রিপোর্টে চিকিৎসকের নাম লেখা স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হচ্ছে। আদতে চিকিৎসক কিন্তু ওই রিপোর্ট তৈরি করছেন না, অথচ তাঁর নাম থাকছে সেখানে। এতে রিপোর্টের যথার্থতা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। রোগীরাও প্রতারিত হচ্ছেন। এটা নিয়ন্ত্রণ করতেই এই নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বর্তমান ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে এই নির্দেশিকা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, অনেক ল্যাবরেটরিতেই ডেঙ্গির পরীক্ষা ঠিকঠাক হচ্ছে না বা রোগ নির্ধারণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: আদালতে ডুকরে কান্না মুস্তাকিনের
অনেক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খাতায়-কলমে চিকিৎসক থাকলেও তাঁদের হাজির থাকতে দেখা যায় না, অথচ তাঁদের নামে রিপোর্ট তৈরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক চিকিৎসক একসঙ্গে বেশ কয়েকটি সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। তিনি নিজে ওই সব সেন্টারের কোনওটিতেই যান না, শুধু নিজের রবার স্ট্যাম্প ভাড়া দেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ল্যাবরেটরি সেই স্ট্যাম্প ভাড়া বাবদ মাসে মাসে তাঁর কাছে টাকা পৌঁছে দেয়— অনেক ক্ষেত্রেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। রিপোর্ট তৈরির সময় কোনও চিকিৎসকের নজরদারি না-থাকায় সেটা ঠিক হচ্ছে, নাকি ভুল— প্রশ্ন থেকেই যায়। অথচ সেই রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে মানুষের রোগ নির্ণয় হয় এবং চিকিৎসা চলে। স্বাস্থ্য দফতরের নতুন নির্দেশিকা এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধের সহায়ক হবে বলে চিকিৎসা শিবিরের আশা।