‘বাংলায় বন্‌ধ হচ্ছে না! ভাঙবে যে, টাকা দেবে সে’

রোম সফরে যাওয়ার আগে ধর্মঘটীদের জন্য কড়া দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে তাঁর ঘোষণা, ‘‘কোনও বন্‌ধ বাংলায় হচ্ছে না!’’ মানুষ যাতে আজ ধর্মঘটের ডাক উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘গাড়ি চালান নিশ্চিন্তে। কোনও গাড়িতে ভাঙচুর হলে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। দোকানের ক্ষতি হলেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

রোম সফরে যাওয়ার আগে ধর্মঘটীদের জন্য কড়া দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার নবান্নে তাঁর ঘোষণা, ‘‘কোনও বন্‌ধ বাংলায় হচ্ছে না!’’ মানুষ যাতে আজ ধর্মঘটের ডাক উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘গাড়ি চালান নিশ্চিন্তে। কোনও গাড়িতে ভাঙচুর হলে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। দোকানের ক্ষতি হলেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।’’

রাজ্যে ক্ষমতায় বসার পর থেকে বিরোধীরা ধমর্ঘট ডাকলে মমতা এমন ভাবেই ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। আবার কেউ কোথাও ভাঙচুর করলে তার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের কথাও বলেছেন। তা যে কেবল কথার কথা নয়, তা বোঝাতে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘আমরা আইন করতে যাচ্ছি। ধমর্ঘটের সময় যদি কেউ ভাঙচুর বা ক্ষতি করে, ক্ষতিপূরণটা তাদেরই দিতে হবে। তার কাছ থেকেই টাকা আদায় করব। আইন তৈরি নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’

Advertisement

মমতা জমানায় ধর্মঘটের দিন নির্ভয়ে রাস্তায় বেরোনোর আশ্বাস প্রতি ধর্মঘটেই থাকে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ বা বাস মালিক, অনেকেই ভাঙচুরের ভয়ে গাড়ি বার করেননি। কারণ, কোন আইনে, কে সেই ক্ষতিপূরণ দেবে, তার কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা ছিল না। তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জানিয়েছিলেন, বিমা সংস্থাগুলি টাকা দেবে। কিন্তু বিমা সংস্থাগুলি জানিয়ে দিয়েছে, ধর্মঘটের সময় কোনও ভাঙচুরে ক্ষতিপূরণ দিতে তারা বাধ্য নয়। আবার সরকারেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনও তহবিল নেই।

এই পরিস্থিতিতে মমতা ক্ষতিপূরণ আদায়ে যে নতুন আইন আনার কথা বলছেন, তা নিয়েও প্রশাসনের অন্দরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পুলিশেরই এক কর্তার প্রশ্ন, ভিড়ের মধ্যে ইট ছুড়ে কেউ কোনও বাস ভেঙে দিলে কী করে তাঁকে চিহ্নিত করা যাবে? চিহ্নিত করা না গেলে ক্ষতিপূরণই বা আদায় হবে কী ভাবে? প্রশাসনের আর এক কর্তার আশঙ্কা, পুলিশ এক জনের জায়গায় অন্যকে ধরে এনে জরিমানা আদায় করতে পারে! ধর্মঘটকারীদের তরফে সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী সরাসরিই বলেছেন, ‘‘ধর্মঘট ব্যর্থ করতে তৃণমূলের ভৈরব বাহিনী রাস্তায় নামবে। বোঝাই যাচ্ছে, তারা গণ্ডগোল লাগিয়ে আমাদের কারও নামে দোষ চাপাবে ক্ষতিপূরণের জন্য!’’

মমতা এ দিন বলেন, ‘‘আমরাও ছোটবেলায় অনেক বন্‌ধ করেছি। দেখলাম, নিজেদের প্রচার ছাড়া কিছুই হয় না! আমি এক দিন টিভিতে মুখ দেখাব, দু’টো বাস ভাঙব, তাতে তো মানুষের ক্ষতি হবে।’’ শ্যামলবাবু আবার বলে রেখেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে যুদ্ধই হোক!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন