—ফাইল চিত্র।
কলেজে ভর্তিকে ঘিরে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। স্কুলে ভর্তিকে কেন্দ্র করে আর কোনও বিতর্ক চায় না রাজ্য সরকার। তাই এ বার স্কুলের ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক (ডিপিও)-কে। স্কুলে ভর্তিতে নজরদারি করবেন তিনি।
স্কুলশিক্ষা দফতর সম্প্রতি ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশিকায় জানিয়েছে, ডিপিও ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন। তাঁকে সাহায্য করবে স্কুলগুলিও। ওই দফতরের এক কর্তা জানান, এর মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়ায় উপরে কার্যত নজর রাখবেন ডিপিও। এই সিদ্ধান্তে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা ক্ষুব্ধ। এত দিন কোনও অসুবিধা হলে জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-কে জানানো হত। এখন ডিপিও-কে নিয়োগ করার অর্থ তো নজরদারি!
তবে এই বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের একাংশের ব্যাখ্যা, স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে কোনও গোলমাল চায় না সরকার। সেই জন্যই এই কাজে এক জন বিশেষ অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। এর আগে বেসরকারি স্কুলে ফি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জেলায় জেলায় যে-সব কমিটি গড়া হয়েছিল, তাতেও ডিপিও-দের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে লটারির মাধ্যমে। তার ফলে অনেকের ভর্তি হতে সমস্যাও হয় বলে অভিযোগ। সে-ক্ষেত্রে ডিআই-এর কাছে আবেদন করলে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। কিন্তু দফতর মনে করছে, ডিআই-দের নানান কাজের চাপে এই সমস্যার সমাধানে অসুবিধা হতে পারে। তা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করেও ডিআই-দের একাংশের ভূমিকায় খুশি নয় সরকার। তাই ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডিপিও-কে যুক্ত করা হয়েছে।
গত মাসে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে অশান্তি হয়। গোলমালের মুখে পড়তে হয় প্রধান শিক্ষককেও। অবরোধ হয় রাস্তা। পরে অভিভাবকদের একাংশ অবশ্য জানান, তাঁরা ওই বিজ্ঞপ্তি বুঝতে ভুল করেছিলেন।
এ বার ভর্তিতে ডিপিও-দের যুক্ত করায় কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, এই সব ক্ষেত্রে ডিআই-রাই বিষয়টি দেখতেন। তাঁরা দেখলেই ভাল হত। এক ডিপিও বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইন মেনে ভর্তি হচ্ছে কি না, সেটুকুই দেখা হবে। কেউ ভর্তি হতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে দেখা হবে সেটাও।’’ স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে স্কুলে আসন-সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে দফতরে আবেদন করতে পারবেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ।