Health

অ্যাম্বুল্যান্স নেই, রোগী আটকে ২১ ঘণ্টা

শুক্রবার বিকেল ৫টায় যাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে, তাঁকে সন্ধ্যায় ‘রেফার’ করা হলেও শনিবার বিকেলের আগে মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৪:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। অথচ সংক্রামক-রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নেই।

Advertisement

পরিস্থিতি এমনই চলছিল। ঘটনা সামনে এল শুক্রবার। সংক্রামক রোগে আক্রান্ত সন্দেহে এক রোগীকে হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিকেল ৫টায় যাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে, তাঁকে সন্ধ্যায় ‘রেফার’ করা হলেও শনিবার বিকেলের আগে মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স। ‘রেফার’ করার প্রায় ২১ ঘণ্টা পরে বৃদ্ধকে কলকাতায় পাঠানো হয়।

বনগাঁ হাসপাতালে মাতৃযান আছে। বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সও হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকে। সেখান থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে কলকাতা যাবেন ভেবেছিলেন রোগীর আত্মীয়েরা। কিন্তু বৃদ্ধ সংক্রামক-রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন শুনে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলতে বেঁকে বসেন চালকেরা। বেশি ভাড়া দিতে চাইলেও রাজি হননি কেউ। বনগাঁ হাসপাতালে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সংগঠনের সঞ্চালক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের নিয়ে যাওয়ার পরিকাঠামো নেই।’’ চালকেরা জানান, এ ধরনের অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীর সংস্পর্শে আসার সুয়োগ থাকে না চালকের। ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকাও জরুরি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মাতৃযান যেহেতু প্রসূতিদের জন্য ব্যবহার করা হয়, তাতেও নেওয়া যায়নি বৃদ্ধকে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা নিজেরাই কলকাতায় সংক্রামক রোগের জন্য ব্যবহৃত অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কথা দিলেও শেষ পর্যন্ত কলকাতা থেকে ওই অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি।

এ দিকে, সংক্রামক রোগী হাসপাতালে এসেছে জানতে পেরে অন্য রোগী ও আত্মীয়দের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হাসপাতালে আসেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ। তিনি দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে দেন। চালককে বুঝিয়ে রাজি করানো হয়। চালকের বসার জায়গা আর রোগীর শোয়ার জায়গার মধ্যে পুরু পর্দা টাঙানো হয়। বিকেল ৪টে নাগাদ বৃদ্ধকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স বেলেঘাটার দিকে রওনা দেয়।

বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সহ চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ করছি, সরকারি অনুমতিপ্রাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সগুলির মধ্যে কোনওটি সংক্রামক রোগীকে নিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত কিনা। বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে, তাঁরা কোন ধরনের রোগী নিয়ে যেতে পারেন। এ নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি জেলাশাসককেও জানানো হবে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও এ ধরনের অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য আবেদন করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। গোপাল জানান, পুরমন্ত্রীর কাছেও একই আবেদন রাখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন